জামিন নাকচ, এমপি লিটন কারাগারে
গাইবান্ধায় শিশু সৌরভকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলায় সংসদ সদস্য (এমপি) মো. মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের জামিন ও রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে। এ সময় তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশও দেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মইনুল হাসান ইউসুফ এ আদেশ দেন।
এদিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা (ডিবি) গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের এ সংসদ সদস্যকে গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যান। গতকাল বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে এমপি লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর লিটনকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর স্ত্রীকেও দেখা যায়। ডিবি অফিসে কিছুক্ষণ রাখার পর তাঁকে নিয়ে গাইবান্ধার উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশ।
এদিকে, এমপি লিটনের সমর্থকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল বের করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। একপর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় অন্তত ৩০ জন নারী-পুরুষ আহত হন।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার (এসপি) আশরাফুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, লিটনের সমর্থকরা মিছিল করছিল। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
গত ২ অক্টোবর ভোরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্ধ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকায় এমপি লিটনের লাইসেন্স করা পিস্তলের গুলিতে আহত হয় শিশু সৌরভ। সৌরভ গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। শিশুটি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় সৌরভের বাবা বাদী হয়ে ৩ অক্টোবর এমপি লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
এ ছাড়া এমপি লিটনের বিরুদ্ধে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ৬ অক্টোবর আরো একটি মামলা করেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর শাহাবাজ গ্রামের হাফিজার রহমান। ওই ঘটনায় মামলার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন এমপি লিটন।
পরে দুই মামলায় জামিন চাইতে গত ১২ অক্টোবর, সোমবার হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন লিটন। হাইকোর্ট তাঁকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। কিন্তু গতকাল বুধবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত ঘোষণা করেন। এর ফলে তাঁকে গ্রেপ্তারে আর কোনো বাধা ছিল না।