৬০ শতাংশের নিচে কোথাও ভোট পড়েনি : ইসি সচিব
প্রথম দফার পৌরসভা নির্বাচনে ৬০ শতাশের নিচে কোথাও ভোট পড়েনি বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর। আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের নিজ কার্যালয়ে ভোটের বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ দাবি করেন।
মো. আলমগীর বলেন, ‘পারসেন্টেজটা এখন ই হয় নাই, তবে এখনো পর্যন্ত যেটা ই করা হয়েছে যে, ৬০ পারসেন্টের নিচে কোথাও ভোট পড়েনি। কোথাও ৭০, কোথাও ৮০ পারসেন্ট ভোট পড়েছে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিতে ভোট খুবই ভালো হয়েছে। গণমাধ্যমে দেখেছি, সব জায়গায় ভোটার উপস্থিতি অনেক বেশি। সকাল থেকেই ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন। আমাদের কাছে আসা এখনো পর্যন্ত যে রিপোর্ট, তাতে দেখা গেছে সব স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই হিসাবে আমরা মনে করি, খুবই সাকসেসফুল একটি নির্বাচন হয়েছে।’
ভোটকেন্দ্রের ভেতর দাঁড়িয়ে অনিয়ম ও কারচুপির ঘটনা প্রত্যক্ষ করছিলেন প্রথম আলোর এক সাংবাদিক। সে সময় ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আজিজুল হক তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে এক আওয়ামী লীগ কর্মীর কাছে তুলে দেন। ছবিগুলো ওই কর্মীই মুছে দেন। সে সময় সাংবাদিককে মারধরও করা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরা এখনো কোনো তথ্য পাইনি। মাত্র আপনার (সাংবাদিক) কাছ থেকে শুনলাম। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগও আমরা পাইনি। পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পঞ্চগড় পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তার গাড়িতে ভাঙচুরের বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তা যখন যাচ্ছিলেন ঘটনাস্থলে, ওখানে ভোটাররা ছিলেন। সে সময় পুলিশ ছিল কর্মকর্তার সঙ্গে। তখন হয়তো কথা কাটাকাটি হয়েছে, তারপর সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করে। সেখানে একজন পুলিশ আহত হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে এখনো পর্যন্ত আমরা ডিটেইলস পাইনি। পেলে বিস্তারিত জানাতে পারতাম।’
ইভিএম ছিনিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে ইসি সচিব বলেন, ‘সীতাকুণ্ডে বেশ কিছু স্থানে ইভিএম কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। কেউ বলেছেন, ওখানে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। সে সময় ইভিএমের মনিটর পড়ে ভেঙে গেছে। যেহেতু ইভিএমে এইচডি কার্ড ছিল সেহেতু নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়নি। এসব ব্যাপারে তদন্ত করে নির্বাচনি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খুলনায় চালনা পৌরসভার বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আবুল খয়ের খান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘আমরা প্রথমে খবর পেয়েছি বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটের দিকে। আবুল খয়ের খানের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আব্দুল মান্নান খান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, বিএনপিপ্রার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সেখানে লেখা ছিল ৩টা ৩২ মিনিটে তিনি মারা গেছেন। তারপর আমরা হাসপাতাল থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করি। সেখানে লেখা আছে ৩টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা গেছেন। দুই স্থানে দুই রকম তথ্য। এটা কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। তারা আগামীকাল যে সিদ্ধান্ত দেবে, তাই হবে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘তবে প্রার্থী মারা যাওয়ার ঘটনায় আপাতত মেয়র পদের নির্বাচনি ফলাফল স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচনি আইন বলে, ভোটের আগে যদি কোনো প্রার্থী মারা যান, তাহলে ওই পদের নির্বাচনটা বাতিল হয়ে যাবে। নতুন করে আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
প্রার্থী মারা যাওয়ার ঘটনায় মেয়র পদের ভোট বাতিল হয়ে যাবে কিনা জানতে চাইলে দুজন নির্বাচন কমিশনারের (ইসি) সঙ্গে কথা হয় এনটিভি অনলাইনের। এদের ভেতরে ইসি রফিকুল ইসলাম খুলনার ওই নির্বাচনের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি এনটিভি অনলাইনকে, ‘ভোট গ্রহণের আগে যদি কোনো প্রার্থী মারা যান, তাহলে ওই নির্বাচন স্থগিত করার কথা আইনে বলা আছে। কিন্তু এখানে তো ওই প্রার্থী একটি হলেও ভোট পেয়েছেন। সুতরাং এখানে নির্বাচন বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে আমার মনে হয়। এটা আমার ব্যক্তিমত। বাকি সিদ্ধান্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা নিবেন। এ ছাড়া আদালত যদি কোনো নির্দেশনা দেন, সেক্ষেত্রে সেটা আলাদা বিষয়।’