জাবিতে বিনামূল্যে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা হবে ৩০০ শিক্ষার্থীর
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য বিনামূল্যে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ। ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং টেস্টের মাধ্যমে এই রোগের বাহক নির্ণয় করা হবে বলে জানানো হয়েছে। আগামী ৭, ৯ ও ১১ ফেব্রুয়ারি বিভাগটির ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
আয়োজনটির উদ্যোক্তা ও গবেষণা প্রজেক্টের প্রধান অনুসন্ধানকারী প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইব্রাহীম খলিল আজ বৃহস্পতিবার এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
উদ্যোগটি সম্পর্কে ড. মো. ইব্রাহীম বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া রোগটি বংশগত। থ্যালাসেমিয়া বাহকের সঙ্গে যদি অন্য থ্যালাসেমিয়া বাহকের বিয়ে হয়, তাহলে তাদের সন্তানদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ২৫ শতাংশ। তাই, বিয়ের আগে অবশ্যই এই রোগের পরীক্ষা করা দরকার।’
ইব্রাহীম খলিল আরো বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য—বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া রোগ মুক্ত হোক। আর কোনো শিশু এই অভিশাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ না করুক। আমারা আগামী ৭, ৯ ও ১১ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক পরিসরে ৩০০ জন শিক্ষার্থীর থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক নির্ণয়ে (ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং টেস্ট) নমুনা সংগ্রহ করা হবে। প্রাথমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম ব্যাচ থেকে ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নমুনা গ্রহণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবে এই নমুনা সংগ্রহ করা হবে। কেউ বাহক চিহ্নিত হলে তাঁকে চেকআপের আওতায় নিয়ে আসা হবে। পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাস খুললে আমরা বৃহৎ পরিসরে ক্যারিয়ার স্ক্রিনিং টেস্ট করানোর চেষ্টা করব।’
এই রোগের মুক্তির বিষয়ে ড. ইব্রাহীম বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া বাহকদের মধ্যে বিয়ে না হওয়া এবং বিয়ে হলে অবশ্যই সন্তান ধারণ করার পর এই রোগের পরীক্ষা করাতে হবে, যাতে সন্তান থ্যালাসেমিয়া বাহক হলে ভর্গপাতের মাধ্যমে এই রোগের বিস্তার রোধ করা যায়।’
থ্যালাসেমিয়া মারাত্মক রক্তস্বল্পতাজনিত একটি বংশগত রোগ। বর্তমানে এই রোগটি বাংলাদেশে ভয়াবহভাবে বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশে প্রায় দেড় কোটি মানুষ এই রোগের বাহক এবং এই মুহূর্তে প্রায় এক লাখ থ্যালাসেমিয়া রোগী দেশে উপস্থিত রয়েছেন। প্রতিবছর প্রায় ১৪ হাজার শিশু ভয়ংকর এই রোগটি নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। আক্রান্ত রোগীর হিমোগ্লোবিন কম থাকে, যার কারণে রোগীকে প্রতি মাসে এক বা একাধিকবার রক্ত দিতে হয়। এ ছাড়া রোগী তার জীবনের পুরোটা সময় নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয় এবং তার স্বাভাবিক জীবনকাল কমে আসে।