রাকিব হত্যা মামলার রায় ৮ নভেম্বর
খুলনায় শিশু রাকিব হত্যাকে শতাব্দীর জঘন্য নির্মম নিষ্ঠুর অপরাধ আখ্যা দিয়ে তিন আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর সুলতানা রহমান শিল্পী। অপরপক্ষে আসামিপক্ষের আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম তুষার সাক্ষীদের সাক্ষ্যপ্রমাণে আসামিরাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা প্রমাণ হয়নি দাবি করে তাদের সাজা না দেওয়ার আবেদন জানান।
আজ রোববার উভয় পক্ষের কৌঁসুলিদের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষে খুলনা মহানগর দায়রা জজ দিলরুবা সুলতানা আগামী ৮ নভেম্বর রাকিব হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন।
এদিকে আজ আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামি মো. শরিফ, মিন্টু খান ও বিউটি বেগমকে আদালতে হাজির করা হয়।
প্রথমে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সুলতানা রহমান শিল্পী তাঁর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তিনি মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীদের দেওয়া সাক্ষ্য বর্ণনা করে বলেন, আসামিরা সবাই প্রাপ্তবয়স্ক। তাঁরা সুস্থ এবং স্বাভাবিকভাবে জেনেশুনে এই জঘন্য নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
সুলতানা রহমান শিল্পী বলেন, এর আগে রাকিব অন্যত্র কাজ নেওয়ায় আসামিরা যে তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল তা সাক্ষীরা আদালকে জানিয়েছেন। তিনি এই অপরাধকে এই শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ অপরাধ আখ্যা দিয়ে সব আসামির দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি জানান।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বলেন, সারা দেশবাসী এই রায়ের দিকে চেয়ে আছে। এই বক্তব্য সমর্থন করে পরে বক্তব্য উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট কাজী আবু শাহিন, মোমিনুল ইসলামসহ একাধিক আইনজীবী।
পরে আসামি মো. শরিফ, মিন্টু খান ও বিউটি বেগমের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম তুষার, মাজহারুল ইসলামসহ কয়েকজন আইনজীবী। এই সময় তৌহিদুল ইসলাম তুষার বলেন, বাদীপক্ষের সাক্ষীরা ঘটনার সঙ্গে আসামিরা সরাসরি জড়িত তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সাক্ষীদের বক্তব্য বর্ণনা দিয়ে আসামিদের নির্দোষ দাবি করেন। এ জন্য তিনি কোনো নিরাপদ ব্যক্তি যেন সাজা না পায়।
উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মহানগর দায়রা জজ দিলরুবা সুলতানা আগামী ৮ নভেম্বর শিশু রাকিব হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
গত ৩ আগস্ট খুলনা মহানগরের টুটপাড়ার একটি গ্যারেজে শিশু রাকিবকে ধরে নিয়ে তার মলদ্বারে কমপ্রেসারের হাওয়া দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন শিশু রাকিবের বাবা মো. নূরুল আলম বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। আর ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী গণপিটুনি দিয়ে মো. শরিফ ও মিন্টু খানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ পরে বিউটি বেগমকে আটক করে। খুলনা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী মোশতাক আহমেদ তদন্ত শেষে ২৫ আগস্ট মামলায় তিন আসামিকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ১১ অক্টোবর থেকে এই মামলায় টানা ৩৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।