যারা আইএস, তারাই বিএনপি-জামায়াত : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘যারা আইএস, তারাই বিএনপি। তারাই জামায়াত। তারাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। একাত্তরের পরাজিত শক্তি আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীদের সহায়তায় ঘুরেফিরে এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। ঘটনাগুলো ঘটানোর পর তারা আইএস, আনসারুল্লাহ নাম দিয়ে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করতে চাইছে। সবকিছুই তারা করছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম বানচাল করতে।’
‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে ব্লগার ও বিদেশি হত্যা একই সূত্রে গাঁথা’- বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
আজ শনিবার ‘৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম স্মৃতি পরিষদ এক স্মরণসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।
দেশি ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মাধ্যমে একাত্তরের পরাজিত শক্তি পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারাই ৩ নভেম্বরে জাতীয় চার নেতা এবং ৭ নভেম্বর খালেদ মোশাররফের মতো মুক্তিযুদ্ধের বীর সৈনিকদের হত্যা করেছে। এই খুনিরাই ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার চক্রান্তকারী।’
যুদ্ধাপরাধের বিচারকে বানচাল করতে এরাই ব্লগার ও বিদেশিদের হত্যা করছে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, এসব হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা।
স্মরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আশরাফ উদ্দিন ইমু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক রাশেদ কামাল, খালেদ মোশাররফের মেয়ে মাহজাবিন খালেদ, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি আহমেদ সাইফুর রহমান প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন খালেদ মোশাররফের স্ত্রী সালমা খালেদ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশের ১৬ কোটি মানুষের ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধ নয়। আমরা সেসব মানুষের আত্মবিশ্বাসের ওপর ভর করে এগিয়ে যেতে চাই।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ব্লগার হত্যায় পাঁচটি মামলার দুটির অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছ। এগুলোর বিচারকাজ শুরু হয়েছে। আমরা আসামিদের চিহ্নিত করেছি। বাকি মামলার অভিযোগপত্র তৈরি হচ্ছে।
অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক যুদ্ধাপরাধীসহ দেশে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফসহ বীর সৈনিকদের হত্যা দিবসে আসুন আমরা এসব চক্রান্ত রুখে দাঁড়াবার সংকল্প করি।’
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ সেই ব্যক্তি যিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে জাতিকে সংঘবদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু একাত্তরের পরাজিত শক্তি তাঁর সেই উদ্যোগকে বানচাল করে দিতে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। তাঁকে হত্যা করে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ থেকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্র নির্মূল করতে নতুন প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।