‘ওনার সঙ্গে বসলে পোড়া মানুষের গন্ধ পাব’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সংলাপে বসলে পোড়া মানুষের গন্ধ পাওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার দুপুরে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংলাপ নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। urgentPhoto
তিনদিনের নেদারল্যান্ডস সফর নিয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বাংলাদেশের উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, ব্লগার-লেখক হত্যার পর সরকারের পদক্ষেপ, সেক্যুলারিজম, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভূমিকা, যুদ্ধাপরাধের বিচারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপে বসা হবে কি না, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন জাতীয় ঐকমত্যের সুযোগ এসেছিল, তখন সংলাপে বসেননি খালেদা জিয়া। এমনকি তাঁকে (খালেদা জিয়া) সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হলেও তাতে সাড়া মেলেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, টেলিফোনে খালেদা জিয়া তাঁকে ঝাড়ি দিয়েছেন। এর পর আর তাঁর সঙ্গে সংলাপ চলে না। তিনি আরো বলেন, সংলাপে বসতে হলে খালেদা জিয়াকে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ছাড়তে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের পাঁচ কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত হয়েছে। মানুষ বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করেছে। মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন হামলা, হত্যা চলছে। এগুলো কৃত্রিমভাবে করানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ঢাকার হোসেনী দালানে বোমা হামলার মাধ্যমে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বের বিষয়টি উসকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সরকার এ ধরনের কার্যক্রম কঠোর হস্তে দমন করেছে।
বাংলাদেশকে আফগানিস্তান-ইরাক বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জ্বালাও-পোড়াও-মানুষ খুন করা, ককটেল মেরে, মানুষকে পুড়িয়ে মেরেও কিছু করতে না পেরে একটা শ্রেণি গুপ্তহত্যায় নেমেছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আইএস আছে এটা প্রমাণ করতে পারলে আমাদের কী অবস্থা হবে, সেটা কি কেউ ভেবে দেখেছেন?’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়ার দিকে নেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু এটা কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়।
আওয়ামী লীগের লোক মরলে কান্নাকাটি শুনি না
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোক মারা গেলে কারো কান্নাকাটি শুনি না। আমাদের লোক মারা গেলে তাদের জীবনটা যেন জীবনই নয়। এটা দুর্ভাগ্য।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে ঢুকে খুন করে বলা হচ্ছে দলীয় কোন্দ্বল। তাই বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে যেন আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগে না নেওয়া হয়।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে লেখা নয়
সংবাদ সম্মেলনে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে যেন কোনো লেখা প্রকাশ না করা হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা সেক্যুলার ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি। সেক্যুলারিজম মানে ধর্মহীনতা নয়। বিকৃত করে লেখা প্রকাশ মানবিক গুণ নয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সব ধর্মকেই সম্মান করি। আমি নামাজ পড়ি, কোরআন তেলাওয়াত করি, অন্য ধর্মকে সম্মান করি।’
খুনিদের ধরা রাষ্ট্রের দায়িত্ব
লেখক-ব্লগার-প্রকাশক হত্যাকারীদের শাস্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বসে নেই, হত্যাকারীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। সকল সচেতন নাগরিক মিলে হত্যাকারীদের ধরতে হবে।’
অ্যামনেস্টি মোটা অঙ্কের টাকা পেয়েছে
বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অ্যামনেস্টির খুনিদের বাঁচানোর জন্য রিপোর্ট প্রকাশ গ্রহণযোগ্য নয়। নিশ্চয়ই মোটা অঙ্কের কিছু পেয়ে গেছে।’