ঢাবিতে ছাত্রলীগ-ছাত্র অধিকার পরিষদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগ ও সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ। আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে এই কর্মসূচি পালন করে সংগঠন দুটি।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশে আসবেন বলে জানা যায়।
এর আগে মোদির আগমনের বিরোধিতা করে কর্মসূচি পালন করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। তাদের ওই কর্মসূচিতে হামলা করে ছাত্রলীগ। এই হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনার এলাকার দিক থেকে এসে তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। তারা কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বিকেলে রাজু ভাস্কর্যে মিছিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ভাস্কর্যের পাদদেশে আগে থেকেই ছাত্রলীগ অবস্থান নেওয়ায় সমাবেশস্থল পরিবর্তন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। পরে তাদের মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সড়ক দ্বীপ, রাজু ভাস্কর্য এবং শামসুন নাহার হল প্রদক্ষিণ করে টিএসসির ডাসের সামনে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলে তারা মোদিবিরোধী এবং হামলার বিচার দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। এতে পরিষদের দুই শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেয়।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আখতার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইনের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, মশিউর রহমান, মাহফুজুর রহমান খান, সোহরাব হোসেন, ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেন।
সভাপতির বক্তব্যে আখতার হোসেন বলেন, ১৮ কোটি মানুষ মোদিকে বাংলাদেশে স্বাগত জানাচ্ছে না। শুধু আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ মোদিকে স্বাগত জানাচ্ছে। যার একমাত্র কারণ গদি রক্ষা করা। এখন পর্যন্ত বাণিজ্যের যে অসমতা সেটা বন্ধ হয়নি, নির্বাচনসহ প্রত্যেকটা সেক্টরে ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধ হয়নি, সীমান্তে হত্যা বন্ধ হয়নি। এত কিছুর পরও আমরা কীভাবে মোদিকে বাংলাদেশের মাটিতে স্বাগত জানাব। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, যদি মোদিকে বাংলাদেশে আনা হয় গদিসহ ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
সমাবেশ শেষে সেখানে নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়।
মোদিকে স্বাগত ছাত্রলীগের : অন্যদিকে, একই সময়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক ছাত্র সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
সংগঠনের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও হল ইউনিটের নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশে সংগঠনটির বিভিন্ন ইউনিটের দুই শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, আইএস মোসাদ ও বৈদেশিক কূটনীতিকদের টাকা দিয়ে ষড়যন্ত্রের লেলিহান শিখা দিয়ে গড়া যে কয়েকটি তথাকথিত সংগঠন, যাদের ছাত্রসংগঠন হিসেবে স্বীকার করে না বাংলাদেশের কোনো ছাত্র সংগঠন, সেই তথাকথিত জঙ্গি সংগঠনগুলো কালো পতাকা মিছিল করে। আসলে এই কালো পতাকা তাদের মনের ভেতরে যে স্বাধীনতার অপশক্তি রয়েছে সেটিরই পরিচায়ক।