টি-টোয়েন্টিতে ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালে। প্রথম ম্যাচে জয় পেলেও ২০ ওভারের ক্রিকেটে সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী। গত নয় বছরে বাংলাদেশ খেলেছে ৪৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এর মধ্যে মাত্র ১২টি ম্যাচে জিতেছে, হেরেছে ৩১টি, বাকি একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশ প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে সে ম্যাচে অতিথি দলকে ৪৩ রানে হারিয়েছিল শাহরিয়ার নাফীসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল।
তবে শুরুটা সাফল্য দিয়ে হলেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা যায়নি। পরের বছর সাতটি ম্যাচ খেলে মাত্র দু্টিতে জিতেছিল বাংলাদেশ। জয় দুটি ছিল কেনিয়ার বিপক্ষে ৫ উইকেটে আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬ উইকেটে।
২০০৮ সালে দুটি ম্যাচ খেলে দুটিতেই হার মানা বাংলাদেশ পরের বছরও জয়ের দেখা পায়নি। তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছিল। ২০১০ সালেও একই অবস্থা, তিন ম্যাচের সবকটিতেই হার।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেয়েছে ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ২০ ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা সাফল্যের বছর ২০১২। সেই বছর নয়টি ম্যাচ খেলে চারটিতে জিতেছিল। ২০১৩ সালে চার ম্যাচের মধ্যে একটিতে, ২০১৪ সালে নয় ম্যাচের দুটিতে এবং এ বছর তিন ম্যাচ খেলে একটি জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ এখনো বেশির ভাগ বড় দলকে হারাতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে তিনটি, ভারতের বিপক্ষে দুটি এবং শ্রীলঙ্কার ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চারটি করে ম্যাচ খেলে একটিতেও জিততে পারেনি।
এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে বাংলাদেশের বেশির ভাগ জয় আইসিসির সহযোগী সদস্যের বিপক্ষে। তার মধ্যে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি আর আফগানিস্তান, কেনিয়া, নেপাল ও নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে একটি করে ম্যাচ জিতেছে। টেস্ট দলের মধ্যে শুধু পাকিস্তানকে একবার এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়েকে দুইবার করে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
ওয়ানডেতে একের পর এক সাফল্য পেলেও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ যে এখনো অনেকখানি পিছিয়ে তা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমরা এখনো খুব একটা সাফল্য পাইনি। ঘরোয়া পর্যায়ে এই ফরম্যাটের ক্রিকেট তেমন খেলা হয় না। তাই আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সাফল্য কম। টি-টোয়েন্টিতে সাফল্য পেতে হলে আমাদের পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে। আর তাহলেই সাফল্য পাওয়া যাবে।’
বিসিবির অন্যতম নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুও বাংলাদেশ অধিনায়কের সঙ্গে একমত, ‘এক বছরে আমরা কয়টাই বা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই। বছরে তিন-চারটি ম্যাচ খেললে সাফল্য পাওয়া তেমন সম্ভব নয়। তবে ওয়ানডেতে আমরা যেভাবে এগিয়েছি, ধীরে-ধীরে টি-টোয়েন্টিতেও তেমন সাফল্য পাব বলে আশা করছি।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স
প্রতিপক্ষ ম্যাচ জয় হার
আফগানিস্তান ১ ১ ০
অস্ট্রেলিয়া ৩ ০ ৩
হংকং ১ ০ ১
ভারত ২ ০ ২
আয়ারল্যান্ড ৪ ৩ ১
কেনিয়া ১ ১ ০
নেপাল ১ ১ ০
নেদারল্যান্ডস ২ ১ ১
নিউজিল্যান্ড ৩ ০ ৩
পাকিস্তান ৮ ১ ৭
স্কটল্যান্ড ১ ০ ১
দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ ০ ৪
শ্রীলঙ্কা ৪ ০ ৪
*ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ ২ ৩
জিম্বাবুয়ে ৩ ২ ১
------------------------------------
মোট ৪৪ ১২ ৩১
*ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।