নারায়ণগঞ্জে নেওয়া হলো নূর হোসেনকে
আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জে নেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১-এর কার্যালয় থেকে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ লাইনে নেওয়া হয় তাঁকে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে র্যাব-১-এর কালো মাইক্রোবাসে করে নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার গাবতলী এলাকার পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়। এর আগ থেকেই সেখানে অবস্থান নেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ড. খন্দকার মহিদউদ্দিন, র্যাব-১১ অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ার লতিফ খানসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। পরে র্যাবের হেলমেট ও জ্যাকেট পরানো নূর হোসেনকে বুঝে নেন তাঁরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে নূর হোসেনকে। আজই তাঁকে আদালতে তোলা হতে পারে।
এদিকে নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জে নেওয়ার পর আদালতপাড়ায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ নূর হোসেনকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মেজর লিয়াকত হোসেন নূর হোসেনকে গ্রহণ করেন। ওই সময় বিজিবি, পুলিশ ও র্যাবের বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে ফেরত আনার পর নূর হোসেনকে আজ শুক্রবার ভোরে উত্তরায় র্যাব-১-এর কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে জানান র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নূর হোসেনকে ফেরত দেয় বিএসএফ। এরপর র্যাব তাঁকে ঢাকায় ফেরত আনে। তাঁকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে—এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকেই যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকায় ভিড় করতে থাকেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা।
রাত সাড়ে ৮টায় নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানিয়েছিলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশ পাওয়ার পর একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্যসহ একটি দল নূর হোসেনকে আনার জন্য বেনাপোলের উদ্দেশে রাতেই রওনা হয়ে গেছে।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকার, সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজন। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ছয়জন এবং পরের দিন আরো একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা ডা. বিজয় কুমার অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে এবং নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে ফতুল্লা থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন।
ওই মামলায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক তিন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, কমান্ডার এম এম রানা, মেজর আরিফসহ ১৮ র্যাব সদস্য এবং নূর হোসেনের সাত সহযোগী এখন কারাগারে আছেন। পলাতক আছেন আরো নয় আসামি।