সেই নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে রিকশাচালকের মামলা
পুরান ঢাকার বংশালের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের সামনে এক রিকশাচালককে মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বুধবার সুলতান আহমেদ নামে ওই নির্যাতনকারীকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি করেন রিকশাচালক।
বিকেলে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো. শাহীন ফকির বলেন, ‘আজ সকালে আমরা জানতে পেরেছি, নির্যাতিত ওই রিকশাচালক রাজধানীর রামপুরায় থাকেন। তারপর আমরা তাঁকে থানায় নিয়ে আসি। এরপর তিনি বাদী হয়ে সুলতান আহমেদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে মামলাটি করেছেন। আগে আসামিকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। এখন তাঁকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
ঘটনার দিনই সুলতান আহমেদকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এখন তিনি কেরানীগঞ্জের কারাগারে রয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলী রেজা মামুন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন। এরপর ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন। এর আগে আদালত এ বিষয়ে ২৯ জুন প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
গত ৪ মে মঙ্গলবার দুপুরে রিকশাচালককে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এক সংবাদকর্মীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্যাতনকারীকে আটক করে পুলিশ।
ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দুপুর আনুমানিক দেড়টার দিকে বংশালে এক ব্যক্তি রিকশাওয়ালাকে চড়-থাপ্পড় মারছেন। সে সময় ওই ব্যক্তি রিকশাচালককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। কিন্তু আশপাশে থাকা কেউ সামনে এগিয়ে আসেননি। সে সময় আরও চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন ওই ব্যক্তি। একপর্যায়ে রিকশাচালক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওই রিকশাচালক যখন মাটিতে পড়ে যান তারপর আবারও গালিগালাজ করতে করতে টেনে তুলেন ওই ব্যক্তি। যখন তিনি পুনরায় রিকশাচালককে মারতে যান, তখন সেখানকার লোকজন এগিয়ে আসেন। এবং ওই ব্যক্তির কাছ থেকে রিকশাচালককে ছাড়িয়ে নেন।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকিরকে নির্দেশনা দেওয়া হয় নিপীড়নকারী লোকটিকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ওসির নেতৃত্বে একটি টিম অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁকে আইনের আওতায় আনে।
আসামিকে আটক করার পর পুলিশ জানিয়েছিল, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে অভিযুক্ত লোকটির নাম সুলতান আহমেদ। তিনি সেই এলাকায় স্থানীয় বাড়িওয়ালা এবং প্রভাবশালী।