নিজামীর আপিলের শুনানি অব্যাহত
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর করা আপিল আবেদনের শুনানি পঞ্চম দিনের মতো শেষ হয়েছে। আগামীকাল বুধবার ফের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেত্বত্বে চার সদস্যের বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
শুনানির সময় নিজামীর পক্ষে আদালতে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এ বিষয়ে এস এম শাহজাহান বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগুলো আদালতে পড়ে শুনানি করেছি। আগামীকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য আদালতে শুনানি করব। এর পর ট্রাইব্যুনালের রায় পড়ার পর যুক্তিতর্ক শুরু হবে।’
এর আগে গতকাল সোমবার চতুর্থ দিনের শুনানি হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়। ওই দিন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে শুনানি শুরু করেন। পরে নিজামীর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন তুহিন নথিপত্র পাঠ করেন।
পরে বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী মামলা তালিকায় এলে শুনানি হবে। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি ষষ্ঠ মামলা। এর আগে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আরো পাঁচটি মামলা আপিলে নিষ্পত্তি হয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছরের ২৯ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১ মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন নিজামীকে। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২৩ নভেম্বর আপিল করেন তিনি। ছয় হাজার ২৫২ পৃষ্ঠার আপিলে মোট ১৬৮টি কারণ দেখিয়ে ফাঁসির আদেশ বাতিল করে খালাস চেয়েছেন তিনি। তাঁর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন এ আপিলটি দাখিল করেন।
নিজামীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের মধ্যে আটটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত। চারটি অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। চারটি অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর বাকী আটটি অভিযোগে তিনি খালাস পান।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের এক মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একই বছরের ২ আগস্ট এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের আদেশে তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।