‘এমন ফাঁকা কমলাপুর স্টেশন আগে দেহি নাই’
‘করোনায় আয় কইম্মা গেছে। গত বছর থেকে ঈদের সময় যাত্রী না হওয়ায় আয় একবারে নেই। ১০ বছর কমলাপুরে কুলির কাজ করে সংসার চালাই। এ বছর কোনো যাত্রী নেই। ঈদের দিন কেমনে চলমু জানি না। ঈদের আগে কমলাপুর এমন ফাঁকা আগে দেহি (দেখি) নাই।’
আজ শনিবার রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে এ কথা বলছিলেন কুলি ইমরুল। তিনি বলেন, করোনার কারণে আয় একবারে নেই, স্টেশনে যাত্রীও নেই। আগে দিনে তাঁর ৫০০ টাকা আয় হলে এখন যাত্রী না হওয়ায় আয় অর্ধেকে নেমে গেছে। সামনে আবার লকডাউন দিলে কীভাবে সংসার চালাবেন তা নিয়েও ভীত ইমরুল।
এদিকে, আজ রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, স্টেশন একবারে ফাঁকা। খুব অল্প সংখ্যক যাত্রী রয়েছে। অনলাইনে টিকেট দেওয়ার কারণে কাউন্টারে তেমন কোনো যাত্রী নেই। তবে বেসরকারিভাবে পরিচালিত কমিউটার ট্রেনের কাউন্টারে রয়েছে ভিড়।
অপরদিকে যেসব যাত্রী স্টেশনে প্রবেশ করছেন, তাদের টিকিট চেক করে প্রবেশ করানো হচ্ছে। সঙ্গে হ্যান্ডমাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য যাত্রীদের অনুরোধ জানানো হচ্ছে। পুরো স্টেশনজুড়ে ছড়িয়ে আছে রোবার স্কাউটের সদস্যরা। কারো মুখে মাস্ক না থাকলে মাস্ক পরার অনুরোধ জানাচ্ছিলেন তারা। স্বাস্থ্যবিধি মানা সংক্রান্ত বিভিন্ন স্লোগানের ফেস্টুনও দেখা গেছে তাদের হাতে। যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশমুখেই রাখা আছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, গত তিনদিন ধরে এই প্রেক্ষাপটে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি। সময়মতো ট্রেন স্টেশনে আসছে, স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকেই ঈদের যাত্রী পরিবহন শুরু হয়েছে। যাত্রীর চাপ সামনে আরও বাড়বে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রী আফসানা খন্দকার বলেন, ‘ঈদে বাড়িতে যাচ্ছি। তবে লকডাউনের কারণে একবারেই বাড়ি চলে যাচ্ছি। ঢাকায় থাকা খুব ব্যয়বহুল। স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। কিন্তু করোনার কারণে চাকরি চলে গেছে। সেই কারণে আমরা বাড়িতে চলে যাচ্ছি।’
রহিম নামের এক যাত্রী বলেন, স্টেশন এমন ভিড়শূন্য হবে আগে বুঝিনি। পরিবারের অনেকে গত দুদিন বাসে করে গেছে। কিন্তু অনেক জ্যামে পড়তে হয়েছে। সেই কারণে আমি ট্রেনে করে আজ বাড়িতে যাচ্ছি। এখানে স্বাস্থ্যবিধি ভালোই মানা হচ্ছে। ট্রেন এমন ফাঁকা পেলে সবসময় পরিবারকে নিয়ে ট্রেনেই যেতাম।