বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের সাক্ষ্যপ্রমাণই বলে জিয়াউর রহমান যুক্ত ছিলেন : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচারের সাক্ষ্যপ্রমাণই বলে দেয় জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন এবং তাঁর সম্পৃক্ততা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) ‘নবারুণ’ ও ‘সচিত্র বাংলাদেশ’ মাসিক পত্রিকা দুটির মুজিববর্ষ সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বিশেষ অতিথির এবং ডিএফপির মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য ‘জিয়া নয়, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগ জড়িত’ এর জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ফখরুল সাহেবরা প্রতি বছর আগস্ট মাস এলেই এ কথাগুলো বলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের সময় সাক্ষী ও আসামিরা যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সেগুলো রেকর্ডেড। তারা জবানবন্দিতে স্পষ্টভাবে বলেছেন কখন, কোথায় জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, জিয়াউর রহমান কী বলেছেন, কিভাবে সম্মতি দিয়েছেন। তাঁর সম্পৃক্ততা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মির্জা ফখরুলকে বলব যে এ ধরনের জঘন্য মিথ্যাচার পরিহার করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের প্রসিডিংটা পড়ার জন্য অনুরোধ জানাব, প্রয়োজনে বিচারের বৃত্তান্ত জনসম্মুখে নিয়ে আসব। তাহলে মানুষ জানতে পারবে আসামিরা তাদের জবানবন্দিতে কী স্বীকার করেছে।’
‘জিয়াউর রহমান যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এটা কর্নেল ফারুক এবং রশিদ দুজনই ১৯৭৬ সালে আগস্ট মাসে যুক্তরাজ্যের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিয়ে স্বীকার করেছেন’ উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জিয়া যদি মোশতাকের আস্থাভাজনই না হয়, তাহলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমানকে কেন সেনাপ্রধান করা হলো? বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সবচাইতে বড় সুবিধাভোগী হচ্ছে জিয়াউর রহমান এবং তাঁর পরিবার।’
‘করোনার টিকা গ্রহণ ছাড়া কেউ বইরে বের হলে শাস্তি হবে কি না’ সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী জানান, সরকারের এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মাস্ক পরার ওপর এবং সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এবং মাস্ক না পরলে যাতে শাস্তি দেওয়া সেজন্য পুলিশের ভূমিকাকে আরও কার্যকর করা প্রয়োজন বলেও মঙ্গলবারের সভায় সবাই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
ড. হাছান মাহমুদ এ সময় ‘নবারুণ’ ও ‘সচিত্র বাংলাদেশ’ মাসিক পত্রিকার মুজিববর্ষ সংখ্যা প্রকাশের জন্য চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের সামনে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরার জন্য এ প্রকাশনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্ববহ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই বাঙালি জাতি, জাতি সত্তা সৃষ্টি হওয়ার পর প্রথম বাংলাদেশ নামের এ রাষ্ট্রের রচনা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালিদের জন্য পৃথিবীতে এটিই একমাত্র জাতি রাষ্ট্র। তাই বঙ্গবন্ধুকে এবং তাঁর আদর্শকে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান-উল-আলম এবং খাদিজা বেগম, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন, প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক আহম্মদ কামরুজ্জামান, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকার, প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মো. নিজামুল কবীর, বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুর রহমান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।