প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ও বিশেষ সহকারী পরিচয়ে চাঁদাবাজি, যুবক গ্রেপ্তার
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ও বিশেষ সহকারী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কখনও বা সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগে মো. শরীফ উদ্দিন নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ডিবির (দক্ষিণ) উপকমিশনার মোহাম্মদ নুরে আলম এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গতকাল সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টঙ্গী পূর্ব থানার এরশাদ নগর চানকিরটেক এলাকা থেকে শরীফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত মো. শরীফ উদ্দিন ওরফে শেখ আকাশ আহমেদ শরীফ ওরফে শেখ আকাশ ইবনে যুবরাজের (২৬) বাড়ি নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে।
জিএমপির উপকমিশনার আরও জানান, শরীফ উদ্দীন নিজেকে কখনও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী, বিশেষ সহকারী, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান তথ্য কর্মকর্তা, বেঙ্গল গ্রুপের পরিচালক, সময় টিভির সাংবাদিক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (পরিচালক প্রশাসন), এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হিসেবে সিআইপি, ৩৬তম বিসিএস ক্যাডার (অ্যাডমিন) ও রাজনৈতিক পরিচয়সহ বিভিন্ন ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। তার কাছ থেকে চারটি আইডি কার্ড (সময় টিভির, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ব্যক্তিগত সহকারী, সিআইপি, কার্যনির্বাহী সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ), দুটি মোবাইল ফোনসেট, একজোড়া হ্যান্ডকাফ, প্রধানমন্ত্রীর নামসহ একটি সিল, একটি প্রাইভেটকার, ২২০টি ইয়াবা, তিনটি লেমেনেটিং করা স্টিকার (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের লোগোসহ, বেঙ্গল গ্রুপ ও সময় টিভির) উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জিএমপির উপকমিশনার জানান, গ্রেপ্তারকৃত শরীফ ছবি এডিট করে নিজের ছবির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির ছবি বসিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। এ ছাড়া ওয়াটকি ব্যবহার করে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছেন—এমন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে প্রতারণা করছিলেন। তার এ চক্রে পাঁচ-ছয়জন মেয়েসহ (বান্ধবী) বেশ কয়েকজন সদস্য রয়েছে। তারা সাধারণত বিত্তশালীদের টার্গেট করে প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।
জিএমপির উপকমিশনার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শরীফ জানিয়েছেন, প্রায় তিন বছর ধরে তিনি প্রতারণার কাজে লিপ্ত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে কুমিল্লায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় গত বছরের ১২ আগস্ট গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
মো. শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে টঙ্গী পূর্ব থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, প্রতারণা, মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে চারটি মামলা করা হয়েছে।