দিনাজপুরে ‘ইয়াসমিন ট্র্যাজিডি দিবস’ উপলক্ষে মহিলা পরিষদের মানববন্ধন
পুলিশ হেফাজতে দিনাজপুরের মেয়ে ইয়াসমিনকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ‘ইয়াসমিন ট্র্যাজিডি দিবস’ উপলক্ষে মানববন্ধন করেছে দিনাজপুর মহিলা পরিষদ। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় দিনাজপুরের দশ মাইল মোড়ে এ মানববন্ধন করে মহিলা পরিষদ।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পুলিশ কর্তৃক ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দিনাজপুরসহ সারা দেশের মানুষ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। ফলে দোষীদের বিচার ও রায় কার্যকর হয়েছে। আমরা মনে করেছিলাম, দেশে আর কোনো নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হবে না। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেশে ভিন্ন চিত্র লক্ষ করছি। দেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করতে হলে সব পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে হবে।
ইয়াসমিনকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দিনাজপুরের সাধারণ জনতা আন্দোলনে নামে। ইয়াসমিন হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে সেদিন যারা নিহত হয়েছিল, তাদের প্রতিও গভীর সমবেদনা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বক্তারা।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি কানিজ রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা আরও বলেন, গত ২৬ বছরের পথ চলায় নারীর প্রতি সহিংসতা দূরীকরণের যে অভিজ্ঞতা, তাতে দেখা যাচ্ছে; নারীর প্রতি সহিংসতা কমেনি—বরং বেড়েছে অনেক গুণ। এ বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সহিংসতার শিকার হয়েছেন দুই হাজারের বেশি নারী। এতে প্রমাণিত হয়, সমাজের প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়নি। এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে দেশে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে—এ রকম ঘটনায় বিচারের হার মাত্র ৩ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান থেকেই দেশে নারী নির্যাতনের বিচার প্রক্রিয়ার প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠে। নারী নির্যাতনসহ সব নির্যাতনের ঘটনায় সুরাহা দেওয়ার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে তাদের দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হতে হবে।
বক্তারা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রুবিনা আক্তারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. মারুফা বেগম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার সহসভাপতি মিনতি ঘোষ, আন্দোলন সম্পাদক গৌরী চক্রবর্তী, সদস্য ফারাবি কবির, শুক্লা কুণ্ডু, রুকসানা বিলকিসসহ জেলা ও কাহারোল উপজেলা মহিলা পরিষদের নেতারা।