নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহালে ন্যায়বিচার পাবে দেশবাসী
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ‘মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি বহাল রাখার বিষয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছি। আশা করি, নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহালের মধ্য দিয়ে বুদ্ধিজীবীর পরিবার ও দেশবাসী ন্যায়বিচার পাবে।’
মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মামলায় আজ সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
মাহবুবে আলম বলেন, ‘নিজামীর মামলার শুনানিতে চারটি চার্জ বিষয়ে আমি বক্তব্য দিয়েছি। কেননা, এই চারটি চার্জে তাঁর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তার মধ্যে ২ নম্বর অভিযোগে একজনকে গলা কেটে হত্যার কথা বলা হয়। ৪ নম্বর অভিযোগে মেঘা ঠাকুর নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে দুজনকে ধর্ষণ এবং নয়জনকে হত্যা করার কথা বলা হয়। ৬ নম্বর অভিযোগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। ১৬ নম্বর অভিযোগে আসামি বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত ছিল। এ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার মাধ্যমে দেশবাসী ন্যায়বিচার পাবে।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল আইনে সরাসরি হত্যায় জড়িত থাকার প্রয়োজন নেই—এ ব্যাপারে শুধু বুদ্ধিজীবীর পরিবাররাই নয়, সারা দেশের মানুষ বিচারপ্রার্থী। মানুষ ন্যায়বিচার চায়। এ অপরাধের সাজা একটাই হতে পারে, তা হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা।’
বুদ্ধিজীবী হত্যায় নিজামী সরাসরি জড়িত ছিলেন কি না—সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘বিজয়ের ঊষালগ্নে নভেম্বর মাসে নিজামী আলবদর নিয়ে যে লেখা লিখেছেন, তাতে অপকর্মে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। সরাসরি মেরেছে, এমন সাক্ষ্য দিতে হবে, সেটা এ আইনে লেখা নেই। তাঁর কর্মে উৎসাহী হলে অপরাধী বলে গণ্য হবেন।’
শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল হিটলারের প্রসঙ্গ টেনে কথা বলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হিটলার নিজের হাতে কাউকে মেরেছেন, এমন কোনো সাক্ষী নেই। কিন্তু এক বিশাল জনগোষ্ঠীকে পরিকল্পনা করে নিধন করেছেন। একইভাবে আলবদর মুক্তিযোদ্ধাদের নিধন করার পরিকল্পনা করেছিল।’
অ্যাটর্নি বলেন, ‘নিজামী উত্তেজক বক্তব্য দিয়েছিলেন। উনি যখন ছাত্রসংঘের সভাপতি, তখন আলবদর গঠিত হয়। আর উনারাই স্বীকার করেছেন, জামায়াতের লোকজনই আলবদরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ছিলেন।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে মামলায় অপরাধ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ শাস্তি পেতে হয়, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। তবে অপরাধের মাত্রা অনুসারে সাজা কমে-বাড়ে। এ আইনে বুদ্ধিজীবী হত্যা সীমাহীন অপরাধ।
নিজামী সরাসরি উপস্থিত ছিলেন না—আসামিপক্ষের এমন যুক্তির জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘মুজাহিদ ও ভারতের ইয়াকুব মেমনের রায় উল্লেখ করেছি। ইয়াকুব মেমন নিজের হাতে কাউকে মারেননি। মেমন ষড়যন্ত্র করেছেন। ১৯ বছর জেল খেটেছেন। এর পর তাঁর ফাঁসি হয়েছে।’