সাতক্ষীরায় এক পরিবারের চার জনকে হত্যায় আসামির মৃত্যুদণ্ড
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে এক পরিবারের চার জনকে হত্যা মামলার একমাত্র আসামি রায়হানুলকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের আদালতে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করা হয়। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১১ মাসের মধ্যে এ রায় ঘোষণা করা হলো। এ সময় আদালত চত্বরে কৌতুহলী জনতার ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া রায়হানুল এ মামলার চার্জশিটভুক্ত একমাত্র আসামি। তিনি নিহত শাহীনুর রহমানের ভাই।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আবদুল লতিফ। তিনি মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। অপরদিকে, আসামিপক্ষ ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এম হায়দর।
এর আগে ১৮ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ এবং মামলার বাদী ও বিবাদীপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনসহ অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় ঘোষণার জন্য ১ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করেছিলেন। পরে এই তারিখ পরিবর্তন করে ১৪ সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর গভীর রাতে কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে একই পরিবারের যে চার জনকে গলাকেটে হত্যা করা হয় তারা হলো—মো. শাহীনুর রহমান (৪০), তাঁর স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী (১০) ও মেয়ে তাসমিন সুলতানা (৮)। ঘাতক শাহীনুর ইসলামের চার মাসের সন্তান মারিয়া সুলতানাকে অক্ষত অবস্থায় ঘটনাস্থলে রেখে যান।
তদন্ত শেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানায়, ওই চার জনকে প্রথমে ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাওয়ানো হয়। গভীর রাতে ঘুমের মধ্যে তারা অচেতন হয়ে পড়লে ওই পরিবারের সদস্য রায়হানুল ইসলাম তাঁর ভাই, ভাবি ও তাঁদের দুই সন্তানের পা বেঁধে গলাকেটে হত্যা করেন। পরে ধারালো অস্ত্রটি নিকটস্থ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করে সিআইডি। ঘটনার পর ১৫ অক্টোবর সকালে শাহীনুরের ভাই রায়হানুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির সাতক্ষীরা পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, রায়হানুল একাই চার জনকে গলাকেটে হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে ১৬৪ ধারায়ও সেই হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন তিনি। এই মামলায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে একমাত্র আসামি রায়হানুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়।
এই মামলায় ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। একজন সাফাই সাক্ষীও দিয়েছেন। দুপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।