সামরিক শক্তির প্রতিযোগিতায় যুদ্ধের ঝুঁকির মুখে এশিয়া
চীন, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান আর ভারতের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতা এশিয়া অঞ্চলকে যুদ্ধের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কা করা হয়েছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, ভারতের যুদ্ধবিমান এবং চীনের সামরিক শক্তি বাড়ানোর প্রতিযোগিতার কারণে এশিয়াজুড়ে তৈরি হয়েছে যুদ্ধের ঝুঁকি।
অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি’র এশিয়া ইনস্টিটিউটের ভিজিটিং ফেলো পিটার লেইটন বলেন, ‘চীনের রয়েছে পরমাণু অস্ত্রের বিশাল মজুদ। সম্প্রতি চীনের হাইপারসনিক মিসাইল পরীক্ষার মতো ঘটনায় বেইজিংয়ের যুদ্ধের ক্ষমতা নিয়ে নতুন করে ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র।’
এ ছাড়া চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মি বিশ্বের সবচেয়ে বড় নৌবাহিনীও তৈরি করেছে। ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বের সর্বাধুনিক ও সবচেয়ে উন্নত তৃতীয় যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী নির্মাণ করতে কাজ করছে চীন। চীন এরই মধ্যে স্টিলথ ফাইটার জেটও তৈরি করেছে।
চীনের সামরিক বাজেটও ২০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। যদিও চীনের সামরিক বাজেট ২০২০ সালের মার্কিন সামরিক বাজেট ৭৪ হাজার মার্কিন ডলারের ৩০ শতাংশের মতো।
পিটার লেইটন বলেন, ‘শঙ্কা জেগেছে, যুদ্ধের শুরুটা হতে পারে তাইওয়ান নিয়ে। চীনের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার শঙ্কা থাকবে।’
তাইওয়ানও প্রস্তুত রয়েছে চীনের সামরিক আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য। এমনটাই জানিয়েছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েনের। তাইওয়ান আক্রান্ত হলে সহায়তা ঘোষণা রয়েছে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নবু কিশির। পশ্চিমের ক্ষমতাধর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছে তাইওয়ান আক্রান্ত হলে সুরক্ষায় এগিয়ে আসবে তারা।
জাপান এরই মধ্যে তাদের উপকূলীয় অঞ্চলের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে সামরিক মহড়াও দিয়েছে। যদিও উত্তর কোরিয়ার ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঝুঁকি তারা বিবেচনায় রেখেছে।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়া গত মাসে নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। উন্নত করছে পরমাণু অস্ত্রের সাবমেরিনগুলো। তাতে সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ ছাড়া দক্ষিণ চীন সাগরের কৃত্রিম দ্বীপ নিয়ে প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে পারে চীন।
এশিয়ার আরেকটি যুদ্ধপ্রবণ অঞ্চল বলা হচ্ছে হিমালয় অঞ্চলকে। এই অঞ্চলে চীনের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সীমান্তে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে ভারত। এ ছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গেও তাদের দীর্ঘ দিনের বিরোধ অমীমাংসিত রয়েছে।