ইতিহাস গড়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ক্রিকেটে পালাবদলের হাওয়া। একটা সময় যে দলটা বেশিরভাগ সময়ই থাকত হারের বৃত্তে বন্দি। এখন তারাই পাচ্ছে ধারাবাহিক সাফল্য। কি ওয়ানডে কি টি-টোয়েন্টি সাম্প্রতিক সময়ে দেখা মিলছে নতুন এক বাংলাদেশের। যারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশের পর এবার ইতিহাস গড়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও জিতল ওয়ানডে সিরিজ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের ছুঁড়ে দেওয়া ১০২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ব্যাটার তামিম-লিটন ব্যাটে কোনো উইকেট না হারিয়ে জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের হয়ে তামিম ৪১ ও লিটন ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন। পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৮১ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। যা ছিল ওয়ানডে ইতিহাসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। এছাড়াও ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো ১০ উইকেটে জয়ের কীর্তি গড়ল তামিমের দল। বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ছিল আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দেওয়ার। তবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় সেই সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের।
এর আগে এর আগে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে আইরিশরা। তবে, তাসকিন-হাসানদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১০১ রানের বেশি তুলতে পারেননি বালবার্নি-হিউমরা। বাংলাদেশের হয়ে একাই পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন পেসার হাসান মাহমুদ। প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষের ১০ উইকেটের সবগুলোই নেয়ার কীর্তি গড়ল বাংলাদেশের পেসাররা।
দলীয় ১২ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় আইরিশরা। হাসান মাহমুদের বলে পঞ্চম ওভারে ওপেনার স্টিফেন ডোহেনিকে হারায় আইরিশরা। ২১ বল খেলে ৮ রান করে ফিরে যায় ডোহেনি। এরপর অধিনায়ক বালবার্নিকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেও খুব বেশি কিছু করতে পারেনি স্টার্লিং।
দলীয় ২২ রানের মাথায় অভিজ্ঞ ব্যাটার স্টার্লিংকে হারিয়ে চাপে পড়ে আয়ারল্যান্ড। ১২ বলে ৭ রান করে এলবিডব্লিউএর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন স্টার্লিং। তার বিদায়ের দুই বল পরেই বিদায় নেন আরেক ব্যাটার হ্যারি ট্যাক্টর। তাকেও এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে আউট করেন হাসান।
এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি অধিনায়ক বালবার্নিও। দলীয় ২৬ রানে তাসকিনের শিকারে পরিণত হয়ে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে আইরিশরা। তবে, ১৯তম ওভারে এবাদতের জোড়া আঘাতে দুই বলে দুই উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।
এরপর আবারও তাসকিনের আঘাত, জোড়া উইকেট নিয়ে এবাদত-হাসানদের মতো একাধিক উইকেটে নিজের নাম লেখান এই পেসার। শেষদিকে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫ উইকেট নেওয়ার স্বাদ নেন হাসান। এরপর আর কেউ প্রতিরোধ গড়তে না পারায় ১০১ রানে অলআউট হয় আইরিশরা। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ৩টি, এবাদত ২টি ও হাসান ৫টি উইকেট নিয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড : ২৮.১ ওভারে ১০১/১০ ( স্টালিং ৭, ডোহেনি ৮, বালবার্নি ৬, ট্যাক্টর ০, ট্রাকার ২৮, ডকরেল ০, ম্যাকব্রাইন ১, অ্যাডাইর ০, ক্যাম্পার ৩৬, হিউম ৩, হ্যামফ্রেইস ৪* ; হাসান ৮.১-১-৩২-৫, এবাদত ৬-০-৯৪-২, তাসকিন ১০-১-২৬-৩, নাসুম ৩-০-১১-০, মিরাজ ১-০-৩-০)
বাংলাদেশ : ১৩.১ ওভারে ১০২/০(তামিম ৪১, লিটন ৫০; অ্যাডাইর ৩-০-২৯-০, হিউম ৩-০-১৫-০, হামফ্রেস ৪-০-৩৫-০, ক্যাম্ফার ৩.১-১-২১-০)
ফলাফল : বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
ম্যাচসেরা : হাসান মাহমুদ
সিরিজসেরা : মুশফিকুর রহিম