ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ম্যাচ ও সিরিজ সেরা সৌম্য
অভিষেকের বছর দারুণ আলো ছড়িয়েছিলেন সৌম্য সরকার। এরপর থেকে তাঁর সময় কাটছিল ভালো-খারাপের মধ্যে। ধারাবাহিকতার অভাবে দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন। জিম্বাবুয়ে সফরে গেলেও সুযোগ হচ্ছিল না মূল একাদশে।
তামিম ইকবাল চোটে পড়ায় অবশেষে টি-টোয়েন্টিতে ওপেন করার সুযোগ হলো। সুযোগ পেয়েই দারুণ করলেন তিনি। বাংলাদেশ জেতা দুই ম্যাচেই বড় ভূমিকা রেখেছেন তিনি। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে সেরা হয়েছেন সৌম্য। একই সঙ্গে আজ রোববার শেষ টি-টোয়েন্টিতেও ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
হারারের স্পোর্টস ক্লাবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ের মাধ্যমে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছে মাহমুদউল্লাহর দল।
সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও ম্যাচ সেরা হন সৌম্য। ওই ম্যাচে বল হাতে ১৮ রান দিয়ে ১ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে খেলেছেন ৪৫ বলে ৫০ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় ম্যাচ পুরো দলের জন্যই কেটেছে হতাশায়। আজ তৃতীয় ম্যাচে সুযোগ পেয়ে সৌম্য করলেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফসেঞ্চুরি। খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ৬৮ রানের ইনিংস। তাঁর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়েই বাংলাদেশ জিতেছে। তাই ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি। সিরিজে মোট তিন ম্যাচে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২৬ রান করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ ১৫০ রান করেছেন স্বাগতিক ওপেনার মাধেভেরে।
আজ ম্যাচটিতে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৫ উইকেটে ১৯৩ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ১৯.২ ওভারে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৯৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তৃতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের ২.২ ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানির অফ স্টাম্পে পিচ করে বেরিয়ে যাওয়া বল উড়িয়ে মারেন মোহাম্মদ নাঈম। কিন্তু টাইমিং ঠিকমতো হয়নি। মিড অফ থেকে একটু পেছনে গিয়ে ক্যাচ নিয়ে নেন লুক জঙ্গুয়ে। ৭ বলে ৩ রান করে ফেরেন নাঈম।
এরপর ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নেমে লড়াইয়ের আশা জাগান সাকিব আল হাসান। উইকেটে গিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসীও দেখা যায় তাঁকে। এক বাউন্ডারি ও দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি। কিন্তু থিতু হয়েও শেষ পর্যন্ত টিকেননি। জঙ্গুয়ের বল উড়িয়ে মেরে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। ১৩ বলে ২৫ রান করে ফেরেন তিনি। ৩২ বলে ৫০ রানে থামে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জুটি।
তবে সাকিব ফিরলেও টিকে ছিলেন সৌম্য সরকার। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। সৌম্যকে ভালো সঙ্গ দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। সৌম্যও ছুটছিল দারুণ ছন্দে। তুলে নেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম টি-টোয়েন্টি হাফসেঞ্চুরি। ভয়ংকর হয়ে ওঠা সৌম্যকে শেষ পর্যন্ত থামান জঙ্গুয়েই। তাঁর বলে ছক্কা মারার চেষ্টা করেন সৌম্য। টাইমিং মেলেনি। বল উপরে উঠে গেলে ক্যাচ নেন মুসাকান্দা। ৪৯ বলে ৬৮ রান করে ফেরেন সৌম্য। টি-টোয়েন্টিতে এটাই তাঁর ক্যারিয়ার সেরা। আগের সেরা ছিল ৬২।
এরপর কিছুদূর লড়াই করে ফেরেন আফিফও। এরপর দলকে জয়ের কাছে নিয়ে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। ২৮ বলে ২৪ রান করে ফেরেন তিনি। অধিনায়ক ফেরার পর নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন শামীম। ম্যাচ শেষে ১৫ বলে ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন অভিষেকের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলা শামীম।