গুজরাটকে হারিয়ে ফাইনালে ধোনির চেন্নাই
১৭৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮৮ রানের মাথায় নেই ৪ উইকেট। মূলত সেখানেই ম্যাচটা হাতছাড়া হয় গুজরাট টাইটান্সের। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে হার্দিক পান্ডিয়া-ডেভিড মিলারদের ব্যাট হাসেনি। যার ফলে ঠিকঠাক লড়াইটাও করা হয়নি গতবারের চ্যাম্পিয়নদের। ব্যাটারদের পর বোলারদের নৈপুণ্যে ১৫ রানের জয়ে চলমান আইপিএলের ফাইনালে উঠল চেন্নাই সুপার কিংস।
আইপিএলে প্লে-অফ মানেই যেন চেন্নাইয়ের আধিপত্য। আইপিএলের ১৫ আসরের ৯টিতেই ফাইনাল খেলেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্লে-অফের স্নায়ুচাপ তাদের জন্য নতুন কিছু নয়। সেই চাপকে কাজে লাগিয়ে গুজরাটকে হারিয়ে রেকর্ড দশমবারের মতো আইপিএলের ফাইনাল নিশ্চিত করল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ মে) চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৭২ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় চেন্নাই। জবাবে সব উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রানে বেশি তুলতে পারেনি গুজরাট।
চলতি আইপিল জুড়েই দুর্দান্ত ফর্মে ছিল চেন্নাইয়ের ওপেনাররা। এই ম্যাচেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আস্থার প্রতিদান দেন চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও ডেভন কনওয়ে। গড়েন ৮৭ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর দলীয় ৮৭ রানে মোহিত শর্মার বলে ডেভিড মিলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৪৪ বলে ব্যক্তিগত ৬০ রানে ফেরেন গায়কোয়াড়।
গায়কোয়াড়ের বিদায়ের পর মাত্র তিন রানের ব্যবধানে দ্বিতীয় ধাক্কা খায় চেন্নাই। এবার ৩ বলে ১ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন শিবাম দুবে। দ্রুতই দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। আজিঙ্কা রাহানেকে নিয়ে সেই চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন কনওয়ে। যদিও খুব বেশিক্ষণ প্রতিরোধ গড়তে পারেননি তারা। দলীয় ১২১ রানের মাথায় ১০ বলে ১৭ করে আউট হন রাহানে। তার বিদায়ের চার রানের মাথায় ফেরেন কনওয়ে। বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে আসে ৩৪ বলে ৪০ রান।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও শেষদিকে রবীন্দ্র জাদেজা ও আম্বাতি রাইডুদের দৃঢ়তায় ৭ উইকেটের বিনিময়ে স্কোরবোর্ডে ১৭২ রান দাঁড় করায় সিএসকে।
গুজরাটের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি ও মোহিত শর্মা।
ফাইনালে যাওয়ার লক্ষ্যে জবাব দিতে নেমে প্রত্যাশিত শুরু করতে ব্যর্থ গুজরাটের দুই ওপেনার শুভমান গিল ও ঋদ্ধিমান সাহা। দলীয় ২২ রানের মাথায় ১১ বলে ১২ রান করে আউট হন সাহা। শুরুতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া গুজরাট চাপ সামাল দেওয়ার আগেই ফের উইকেট হারায়।
এবার আউট হন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। ৭ বলে ৮ রান করেন এই হার্ডহিটার ব্যাটার। পান্ডিয়ার বিদায়ে বেশ চাপে পড়ে গুজরাট। দাসুন শানাকাকে নিয়ে সেই চাপ সামালের কাজটা করেন গিল। খুব বড় জুটি না গড়তে পারলেও এই দুইজনের ব্যাটে কিছুটা স্বস্তি পায় গুজরাট।
দলীয় ৭২ রানে ১৬ বলে ১৭ করে শানাকার আউটে বিপদ বাড়ে গুজরাটের। এরপর আর কোনো ব্যাটারই ক্রিজে থিতু হতে পারেনি। দলীয় ৮৮ রানের মিলারের বিদায়ে মহাবিপদে পড়ে গুজরাট। মিলারের পর একই ওভারে ফেরেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা গিল। আউটের আগে গিলের ব্যাট থেকে আসে ৩৮ বলে ৪২ রান।
গিলের বিদায়ের পর কার্যত জয়ের আশা শেষ হয়ে যায় গুজরাটের। এরপর বিজয় শঙ্কর ও রশিদ খান মিলে শেষ প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। তাতে খুব বেশি লাভ হয়নি। ১৫৭ রানে থামতে হয় তাদের।