জিতেও চোখের জলে বিদায় নিলেন সুয়ারেজরা
একটি গোলের আফসোস নিয়ে শেষ হলো কাভানি-সুয়ারেজদের কাতার বিশ্বকাপ মিশন। ঘানার বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ের পরেও চোখে জল নিয়ে বিদায় নিতে হলো লুইস সুয়ারেজদের। পর্তুগালের বিপক্ষে ২-১ গোলে দক্ষিণ কোরিয়ার জয়ের কারণে এমন সর্বনাশ হলো উরুগুয়ের। ঘানার বিপক্ষে আর একটি গোল পেলে দ্বিতীয় পর্বে যেতে পারত উরুগুয়ে।
আজ শুক্রবার রাত ৯টায় কাতারের আল জানুব স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল উরুগুয়ে-ঘানা। উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ কি খালি হাতে কাতার থেকে ফিরবেন? প্রথমার্ধে ঘানার বিপক্ষে দুই গোল করে সে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে রেখেছিল উরুগুয়ে। চোখেমুখে স্বপ্ন পুনরায় স্বপ্ন তৈরি হয়েছিল তাঁদের। তবে কে জানত? দ. কোরিয়ার বিপক্ষে উড়ে যাবে পর্তুগাল। আর তাতেই থেমে যেতে হবে সুয়ারেজদের।
এ দিন প্রথমার্ধের বিরতির আগে ঘানার বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে সংশয়কে উড়িয়ে দেওয়ার বার্তা দিয়েছিল উরুগুয়ে শিবির। তবে শেষ পর্যন্ত হতাশাই ভর করলো। ম্যাচে ১৬ মিনিটের সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল আদায়ের সহজ সুযোগ নষ্ট করেছিল ঘানার স্ট্রাইকার আন্দ্রে আয়ু। মোহাম্মদ কুদুস উরুগুয়ের ডি-বক্সের মধ্যে ফাউলের শিকার হয়েছিলেন। পরে ভিডিও সহকারী রেফোরি (ভিএআর) দেখে দেওয়া হয়েছিল পেনাল্টি। সেই সুযোগটিই মিস করেন আন্দ্রে। গোল থেকে বঞ্চিত হয় ঘানা। এ যাত্রায় নায়ক বনে যান উরুগুয়ের গোলরক্ষক সার্জিও রোচেট।
ঘুরে দাঁড়িয়ে আক্রমণ শুরু করেছিল লুইস সুয়ারেজের দল। ২৬ মিনিটেই আসে সফলতা। উরুগুয়ের স্ট্রাইকার জর্জিয়ান ডি আরেসকেটা দুর্দান্ত হেড করে ঘানার জালে বল ঢুকান। গোলটি আসতে পারত সুয়ারেজের পা থেকে। তবে সুয়ারেজের গোলমুখী দারুণ শট রুখে দেন ঘানার গোলরক্ষক লরেন্স আটি জিগি। তবে সেই বলটিকেই হেড দিয়ে গোলে জড়ান আরেসকেটা। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় উরুগুয়ে।
৩২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেছিলেন আবারও উরুগুয়ের স্ট্রাইকার জর্জিয়ান ডি আরেসকেটা। এবারও গোলে সহায়তা করলেন সুয়ারেজ। গোলের সামনে যে সুযোগ তৈরি হয়েছিল সেটিই লুফে নিলেন আরেসকেটা। দলের ও নিজের ব্যাক টু ব্যাক গোল করে দলকে করলেন চাঙ্গা। সঙ্গে বিশ্বকাপে টিকে থাকার লড়াইকে করলেন উজ্জীবিত। এরপরে আর কোনো গোল না আসেনি। তাতে ২-০ গোল নিয়ে বিরতিতে যায় দুদল।
বিরতি শেষে ৬৪ মিনিটে ফ্যাকুন্ডো পেলিস্ট্রি গোলমুখে ক্ষিপ্র গতির এক শট করেন। তবে সেটি গোলের পাশ দিয়ে বাইরে গিয়ে পড়ে। না হলে উরুগুয়ে নিশ্চিত গোল পেতে পারত। তাতে শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হতো নক আউট পর্ব। কিন্তু মন্দ ভাগ্য নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো তাঁদের। ৭৮ মিনিটে ঘানার অ্যান্টোইন সেমেনিও মিস করেন গোল লাইন। ফলে ঘানাকে থাকতে হয়েছিল গোল শূন্য।
এদিকে আরেকটি গোলের জন্য মরিয়া হয়ে লড়াই শুরু করে উরুগুয়ে। পর্তুগালের বিপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়া ২-১ গোলের জয় পাওয়ায় সুয়ারেজদের দরকার হতো ৩-০ গোলের ব্যবধানে জয়।
৮৮ মিনিটে অ্যাডিনসন কাভানির নিশ্চিত গোল সেভ করেন ঘানার গোলরক্ষক লরেন্স আটি জিগি। যদিও তার আগে বেজে ওঠে অফসাইডের বাঁশি। ফলে গোল হলেও সেটি বাতিল হতো। শেষ পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করেও আরকেটি গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে উরুগুয়ে। আর তাতেই গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হলো কাভানি-সুয়ারেজদের।
‘এইচ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নক আউট নিশ্চিত করেছে পর্তুগাল এবং রানার্সআপ দক্ষিণ কোরিয়া।