তাইজুলের স্পিনে ২১৪ রানে শেষ আয়ারল্যান্ড
দিনের শুরুটা যেভাবে হয়েছে সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। নিজেদের মাঠে টেস্টের নবীন দল আয়ারল্যান্ডকে পেয়েও পরীক্ষা দিতে হয়েছে বাংলাদেশি বোলারদের। তবে শেষ পর্যন্ত প্রথম দিনে অতিথিদের থামাতে পারাটাই বড় স্বস্তি হয়ে থাকবে বাংলাদেশের। তাইজুল ইসলামের স্পিন ঘূর্ণিতে প্রথম ইনিংসে আইরিশদের ২১৪ রানে থামিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।
আজ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) একমাত্র টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৭৭.২ ওভারে ১০ উইকেটে ২১৪ রান তুলেছে আয়ারল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেছেন হ্যারি ট্যাক্টর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেছেন ট্যাকার।
মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং বেছে নেয় আয়ারল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দেখেশুনে করলেও ওপেনিং জুটি বড় করতে পারেনি আইরিশরা। পঞ্চম ওভারেই জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি পেসারের ফুল লেন্থ ডেলিভারি মোকাবিলায় লাইন মিস করেন মারে কামিন্স। বল গিয়ে লাগে আইরিশ ওপেনারের প্যাডে, জোরালো আবেদন উঠলে তাতে সাড়া দিতে দেরি করেননি আম্পায়ার। ১০ বলে ৫ রান করে থামেন কামিন্স।
দলীয় ২৭ রানে ভাঙে আরেক ওপেনার জেমস ম্যাককলামের প্রতিরোধ। ইবাদত হোসেনের বাউন্স করা বলে দ্বিতীয় স্লিপে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ম্যাককলাম। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৩৪ বলে ১৫ রান।
দুই পেসার মিলে দুই ওপেনারকে ফেরানোর পর তৃতীয় আঘাত হানেন তাইজুল। ২২তম ওভারে তাইজুলের স্পিনে পা দেন বালবার্নে। মাত্র ৪৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে দিনের শুরুটা দারুণ হয় বাংলাদেশের। প্রথম সেশনে ২৬ ওভার ব্যাটিং করে ৩ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৬৫ রান তোলে আয়ারল্যান্ড।
কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে এসে চমৎকার জুটি পেয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। চতুর্থ উইকেটে হ্যারি ট্যাক্টর ও কার্টিস ক্যাম্পার মিলে পথ দেখান আইরিশদের। দুজনে মিলে দ্বিতীয় সেশনের অনেকটা সময় দাপট দেখান। এর মধ্যে ৮০ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন ট্যাক্টর। আয়ারল্যান্ডের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টে হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি।
ট্যাক্টরের সঙ্গে থাকা কার্টিসও দেখান দারুণ দৃঢ়তা। দুই ব্যাটারের সামনে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় বাংলাদেশি বোলারদের। অবশেষে ৪২তম ওভারে এই জুটি ভেঙে স্বস্তি ফেরান মিরাজ। ট্যাক্টরকে বোল্ড করে ৫০ রানেই থামান এই অফ স্পিনার। ১৪৫ মিনিট উইকেটে থাকা ট্যাক্টর নিজের ইনিংস সাজান ৯২ বলে, ৬ বাউন্ডারি আর এক ছক্কা দিয়ে।
মিরাজের পর তাইজুল ইসলাম পেয়ে যান জোড়া সাফল্যের দেখা। প্রথমে উইকেটে নতুন আসা পিটার মুরকে তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় করেন। এরপর এলবির ফাঁদে ফেলেন থিতু হয়ে যাওয়া কার্টিসকে। ফেরার আগে ৭৩ বলে ৩৪ রান করেন কার্টিস। সবমিলিয়ে দ্বিতীয় সেশনে তিন উইকেট হারিয়ে ৮০ রান তোলে আইরিশরা।
শেষ সেশনে টেলএন্ডারদের কাছে ভুগতে হয় বাংলাদেশকে। অ্যান্ডি, ট্যাকার ও অ্যাডায়রা মিলে টেনে নেন অতিথিদের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত তাইজুল আরও তিনজনকে বিদায় করার পর ২১৪ রানে আয়ারল্যান্ডকে থামায় বাংলাদেশ। বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে ৫৮ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। দুটি উইকেট নিয়েছেন ইবাদত হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। শরিফুল পেয়েছেন একটি উইকেট।
বোলিংটা আরও ভালো হতে পারতো বাংলাদেশের। পাঁচ বোলার নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশের কাছে প্রত্যাশার পারদ ছিল আরও উঁচুতে। কিন্তু দিনের শুরুটা ঠিকঠাক করলেও সেটা পারেননি ধরে রাখতে। তার মধ্যে শুরু থেকে সাকিব আল হাসানও বোলিংয়ে আসেননি। ৬৬ ওভারে প্রথম বল আসেন অধিনায়ক। শেষ দিকে ৩ ওভার বোলিং করে ৮ রান দিয়ে ছিলেন উইকেট শূন্য।