দিন শেষে লড়াইয়ে রাখলেন লিটন-মাহমুদউল্লাহ
হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দিনের শুরুটা হয়েছিল চরম হতাশা দিয়ে। একে একে ব্যর্থ হয়ে ফিরেছিলেন টপ অর্ডাররা। মাঝে অধিনায়ক মুমিনুল হক লড়াই করলেও স্থায়ী হতে পারেননি। এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ে একটা সময় মনে হয়েছিল ২০০-এর ভেতর অলআউট হয়ে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হতে দেননি লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ।
দুজনে মিলে সপ্তম উইকেটে খেলেছেন ১৩৮ রানের ইনিংসে। তাতেই লড়াইয়ে টিকে রইল বাংলাদেশ। দিনের শেষ দিকে লিটন ফিরলেও টিকে ছিলেন হাফসেঞ্চুরিয়ান মাহমুদউল্লাহ।
আজ বুধবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের প্রথম দিন আট উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২৯৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। দিন শেষে উইকেটে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ১৪১ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ১৩ রানে উইকেটে ছিলেন তাসকিন আহমেদ।
দলের চরম বিপর্যয়ে মাঠে নামা লিটন সেঞ্চুরির পথে হাঁটছিলেন। কিন্তু সেঞ্চুরির থেকে ঠিক ৫ রান দূরে থেকে আউট হলেন তিনি। ফেরার আগে ১৪৭ বলে ৯৫ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এটাই তাঁর টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। আগে সেরা ছিল ৯৪ রানের। লিটনের পর উইকেটে এসে ফিরে যান মেহেদি মিরাজও। শেষ দিকে তাসকিনকে নিয়ে দিন পার করেন মাহমুদউল্লাহ।
এদিন টসে জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ৮ রান তুলতেই দুই উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে নামা সাদমান ইসলাম ও সাইফ হাসান দুজনেই ব্যর্থ হন। আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত।
তিন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন মুমিনুল। কিন্তু ১১ রানের মাথায় ব্লেসিং মুজারাবানির করা ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি ছেড়ে দিয়ে এলবিডব্লিউ হন মুশফিকুর রহিম। অবশ্য টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল স্টাম্পের ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছিল। কিন্তু বল না বুঝেই ছেড়ে দিলেন তিনি।
মুশফিককে হারানোর পরপরই আরেকটি ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলে ফেরা সাকিব এই ম্যাচেও দেখান ব্যর্থতা। ভিক্টর নিয়াউচির অনেক বাইরের বল মোকাবিলা করতে গিয়ে তিন রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
দ্বিতীয় সেশনে চা বিরতিতে যাওয়ার আগে সাজঘরে ফেরেন মুমিনুল। তখন বাংলাদেশের রান ছিল ১৩২। যার অর্ধেকই আসে মুমিনুলের ব্যাট থেকে। ৯২ বল মোকাবিলা করে ১৩ বাউন্ডারিতে ৭০ রান করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
ম্যচটিতে বাংলাদেশ দলে ৯ জন ব্যাটসম্যান নেওয়া হয়েছে। দলে সুযোগ পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন তিনি।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নেই জিম্বাবুয়ে। তাই সাধারণ টেস্টের আদলেই হচ্ছে এই লড়াই। তবে টেস্ট ক্রিকেটের তলানির দল হওয়ায় দুদলই চাইবে ম্যাচটি জিততে। সেই হিসেবে ঘরের মাঠ বিবেচনায় চ্যালেঞ্জিং হবে বাংলাদেশের জন্য। মাঠে নেমে সেই চিত্রই দেখাচ্ছে মুমিনুল হকের দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : প্রথম দিন শেষে ৮৩ ওভারে ২৯৪/৮ ( সাইফ ০, সাদমান ২৩, নাজমুল ২, মুমিনুল হক ৭০, মুশফিক ১১, সাকিব ৩, মাহমুদউল্লাহ ৫৪*, লিটন দাস ৯৫, মেহেদী ০, তাসকিন ১৩*; মুজারাবানি ১৬-৩-৪৮-৩, রিচার্ড ১৫-৫-৩৬-১, তিরিপানো ১৩-৪,৩৬-২, ভিক্টর ১২-১-৬৯-২)।