বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লাকে হারিয়ে রংপুরের দারুণ শুরু
শিরোপা ধরে রাখার মিশনে নেমে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হতাশা দেখল বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। রংপুর রাইডার্সের রানের কাছে পাত্তাই পেল না কুমিল্লা। শক্ত পুঁজি নিয়ে চ্যাম্পিয়নদের হেসেখেলে হারাল নুরুল হাসান সোহানের রংপুর। ৩৪ রানের বড় জয়ে আসর শুরু করল রাইডার্সরা।
সব বিতর্ক ছাপিয়ে মাঠে গড়িয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এর নবম আসর। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স মুখোমুখি হয় রংপুর রাইডার্সের। সন্ধ্যার কুয়াশা ভেদ করে ফ্লাডলাইটের আলো নিজেদের দিকে টানতে পারেনি কুমিল্লা। কুমিল্লাকে হারিয়ে আলোটা নিজেদের উপর নিয়ে নেয় রংপুর।
টস জিতে ফিল্ডিং নেয় কুমিল্লা। প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে রংপুরের সংগ্রহ ১৭৬ রান। মিরপুরের শিশিরভেজা উইকেটে শুরুতেই ঝড় তোলেন ওপেনার রনি তালুকদার। চারের ফুলঝুরি ছুটিয়ে ৬৭ রান তোলেন মাত্র ৩১ বলে। খুশদিল শাহ'র বলে স্ট্যাম্পিং হওয়ার আগে ইনিংসটি সাজান ১১ চার ও ১ ছয়ে। দলীয় নবম ওভারে দলীয় ৮৪ রানে রনি আউট হন। রনি আউট হওয়ার পর কিছুটা দেখেশুনে খেলে রংপুর।
শুরুর ৯ ওভারে ওভারপ্রতি প্রায় ১০ করে নিলেও কুমিল্লার বোলাররা মাঝের দিকে আটকে রাখে রংপুরকে। সুবিধা করতে পারেননি সিকান্দার রাজাও। শেষ দিকে নুরুল হাসানের বিশেষ করে খুশদিল শাহ ও ফজলের বল থেকে বেশি রান তুলতে পারেনি রংপুর। শেষ ওভারে ম্যাচে নিজের একমাত্র উইকেট পান মুস্তাফিজুর রহমান, সাজঘরে ফেরান বেনি হাওয়েলকে।
১৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। দলীয় চতুর্থ ওভারে ব্যক্তিগত ১০ রানে রাকিবুল হাসানের বলে হাসান মাহমুদকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান লিটন দাস। ২৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় কুমিল্লা। ডেভিড মালান ও সৈকত আলিও দ্রুত ফিরে গেলে ৫৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে গড়েন ৫৮ রানের জুটি। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ২৩ বলে ৩৫ রান করেন ইমরুল। ইমরুল আউট হওয়ার এক বল পরেই আউট হন মোসাদ্দেক। এরপর ফের বিপর্যয় কুমিল্লা শিবিরে।
রংপুর রাইডার্সের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় কুমিল্লা। ইমরুল ছাড়া প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি কেউই। তাতে হতাশা সঙ্গী হয় কুমিল্লার। শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা অলআউট হয় ১৪২ রানে।
রংপুরের হয়ে বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দেন বেনি হাওয়েল। ব্যাট হাতের ব্যর্থতা পুষিয়ে সিকান্দার রাজা ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট। হাসান মাহমুদ ২০ রানের বিনিময়ে করেন ৩ শিকার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৭৬/৫। (রনি ৬৭, নাইম ২৯, শোয়েব ৩৩, রাজা ১২, নুরুল হাসান ১৯, বেনি হাওয়েল ৮, মেহেদি ২*; ফারুকী ৪-০-২৮-১, নবী ২-০-৩০-০, খুশদিল ৪-০-২৫-১, আশিকুর ৪-০-৪৭-০, মোসাদ্দেক ২-০-১৩-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৩১-১)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৯.১ ওভারে ১৪২/১০। (সৈকত ১৬, লিটন ১০, মালান ১৭, ইমরুল ৩৫, মোসাদ্দেক ১৫, নবী ৫, খুশদিল ১, নবী ১, জাকের ১৯, আশিকুর; বেনি হাওয়েল ৪-০-১৬-১, রাজা ৪-০-২৩-২, রবিউল ৪-০-৩৩-২, রাকিবুল ১-০-৭-১, আজমতউল্লাহ ৩-০-২৭-১, হাসান মাহমুদ ৩.১-০-২০-৩)।
ফল: রংপুর রাইডার্স ৩৪ রানে জয়ী।