মুস্তাফিজের ফেরার ম্যাচেও দিল্লির হার
আইপিএলে সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না দিল্লি ক্যাপিটালসের। কোনো ভাবেই পাচ্ছে না জয়ের দেখা। টানা ৪ ম্যাচে হেরে চলতি আসরে সবচেয়ে নাজুক অবস্থানে ডেভিড ওয়ার্নারের দল। এবার ঘরের মাঠে আইপিএলের সবচেয়ে সফল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে হারের স্বাদ পেতে হলো দিল্লিকে।
গতকাল মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৭২ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় দিল্লি। জবাবে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে আসরে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নেয় রোহিত শর্মার দল।
প্রথম ৩ ম্যাচে একাদশে মুস্তাফিজকে না দেখে হতাশই হয়েছেন বাংলাদেশি সমর্থকরা। তড়িঘড়ি করে উড়িয়ে নিয়ে গেলেও কোনো ম্যাচেই খেলার সুযোগ পায়নি মুস্তাফিজ। অবশেষে ভক্তদের আক্ষেপ মিটেছে। একাদশে সুযোগ পেয়েছেন কাটার মাস্টার। তবে দিল্লির হারের দিনে বল হাতে সামর্থ্যের সেরাটা দিতে পারেনি মুস্তাফিজ।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করেছিল দিল্লির দুই ওপেনার পৃথ্বী শ ও ডেভিড ওয়ার্নার। তবে হঠাৎই ছন্দপতন। দলীয় ৩৩ রানে শোকিনের বলে গ্রিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পৃথ্বী। তার বিদায়ের পর মনিশ পান্ডেকে নিয়ে ফের জুটি গড়েন ওয়ার্নার। তবে সেট হয়েও ২৬ রান করে পান্ডের বিদায়ে জুটি বড় করা হয়নি ওয়ার্নারের। দলীয় ৭৬ রানে চাওলার বলে বেহরেনডফের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
এরপর মাত্র ১৫ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দিল্লি। তবে সেই চাপকে শক্তিতে পরিণত করে ২৫ বলে ৫৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন অক্ষর প্যাটেল। মূলত তার এই ঝড়ো ফিফটিতেই লড়াকু সংগ্রহের দেখা পায় দিল্লি। শেষদিকে লোয়ার অর্ডার ব্যাটাদের ব্যর্থতায় সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৭২ রানের বেশি তুলতে পারেনি ওয়ার্নারের দল। মুম্বাইয়ের হয়ে চাওলা-বেহেরেনডফ ৩টি করে ও মেরেডিথ ২টি উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত এক ওপেনিং জুটি গড়ে দিল্লিকে পাহাড়সম চাপে ফেলে মুম্বাই। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও ইশান কিশানের ব্যাটে ৭ ওভারেই স্কোরবোর্ডে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭০ রান তোলে মুম্বাই। এর আগে দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে শুরুটা মন মতো করতে পারেনি মুস্তাফিজ। ১ ওভার বল করে খরচ করেন ১৩ রান।
দলীয় ৭১ রানে কিশানের বিদায়ে প্রথম সাফল্যের দেখা পায় দিল্লি। ২৬ বলে ৩১ রান করে রান আউটের শিকার হন ইশান। অবশ্য শুরুতে এত বড় জুটি গড়ে ফেলায় তার বিদায়েও খুব একটা প্রভাব পড়েনি মুম্বাইয়ের ব্যাটিংয়ে। কিশানের বিদায়ের পর তিলক বার্মাকে নিয়ে ফের বড় জুটি গড়েন রোহিত। শেষ ৬ ওভারে যখন জয়ের জন্য মুম্বাইয়ের দরকার ছিল ৫২ রান। তখন দ্বিতীয় বারের মতো বোলিং আক্রমণে আসেন মুস্তাফিজ। প্রথম ওভারে খরুচে বোলিং করলেও দ্বিতীয় ওভারে ঘুরে দাঁড়ায় মুস্তাফিজ। কোনো উইকেট না পেলেও খরচ করেন মাত্র ২ রান।
এই দুইজনের ৬৮ রানের জুটিতে জয়ের ভিত পায় মুম্বাই। দলীয় ১৩৯ রানে ২৯ বলে ৪১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বিদায় নেন তিলক। তবে তার বিদায়ের পরের বলেই আউট হন সুর্যকুমার যাদব। দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে মুম্বাই। এরপর ইনিংসের ১৭তম ওভারে ফের বোলিংয়ে আসেন মুস্তাফিজ। দ্বিতীয় ওভারের মতো তৃতীয় ওভারেও দুর্দান্ত বোলিং করেন মুস্তাফিজ। তুলে নেন রোহিত শর্মার উইকেট। ৪৫ বলে ৬৫ রান করে ফিরে যান রোহিত। মূলত সেটাই হতে পারত ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
তবে শেষের চাপ সামাল দিয়ে ডেভিভ-গ্রীনের ব্যাটে জয় পায় মুম্বাই । দিল্লির হয়ে মুকেশ ২টি ও মুস্তাফিজ ১টি উইকেট নিয়েছেন।