শেষ বলের নাটকীয়তায় জিতল হায়দরাবাদ
এবারের আইপিএল যেন শেষ ওভারে সবটুকু নাটকীয়তার পসরা সাজিয়ে বসেছে। রাজস্থানের সোয়াই মানসিং স্টেডিয়ামের নাটকটাও গড়িয়েছে শেষ বল পর্যন্ত। শেষ বলে জিততে হায়দরাবাদের প্রয়োজন ছিল ৫ রান। আবদুল সামাদ উড়িয়ে মেরেছিলেন। ক্যাচ হয়েছেন। রাজস্থান যখন উল্লাসে মাতবে, আম্পায়ার সিগন্যাল দিলেন নো বলের। হায়দরাবাদের ১ বলে প্রয়োজন নেমে আসে চারে। আবারও উড়িয়েই মারলেন সামাদ। বল সীমানা ছাড়া করে মাঠ ছাড়লেন জয় নিয়ে।
আইপিএলে রোববার (৭ মে) দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় রাজস্থান রয়্যালস ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। রুদ্ধশ্বাস শেষ ওভারের শেষ বলে ছয় মেরে রাজস্থানের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় হায়দরাবাদ।
এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২১৪ রান করে রাজস্থান। জবাবে ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ২১৭ রান করে হায়দরাবাদ।
সোয়াই মানসিং স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। ওপেনিং জুটিতে ৫ ওভারে ৫৪ রান তোলেন যশস্বী জাইসওয়াল ও জস বাটলার। ১৮ বলে ৩৫ রান করে মার্কো জেনসেনের বলে নটরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জাইসওয়াল। ৫৪ রানে প্রথম উইকেট পড়ার পর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক স্যামসন। বাটলার ও স্যামসনের জুটি ভাঙে দলীয় ১৯২ রানে। ১৩৮ রানের চমৎকার এই জুটি শেষ হয় বাটলার আউট হলে। আউট হওয়ার আগে ১০ চার ও ৪ ছয়ে ৫৯ বলে ৯৫ রান করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে তাকে লেগবিফোরের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান ভুবনেশ্বর কুমার। তার আগে অবশ্য যা হওয়ার হয়ে গেছে। ৩৮ বলে ৪ চার ও ৫ ছয়ে ৬৬ বলে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক স্যামসন। রাজস্থান পায় ২ উইকেটে ২১৪ রানের পাহাড়সম পুঁজি।
হায়দরাবাদের হয়ে একটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর ও জেনসেন।
বড় লক্ষ্যের পিছু ছুটতে গিয়ে শুরুতেই খেই হারায়নি রাজস্থান। আনমোলপ্রিত সিং ও অভিষেক শর্মার ওপেনিং জুটিতে আসে ৫১ রান। ২৫ বলে ৩৩ রান করে যুজবেন্দ্র চাহালের বলে শিমরন হেটমায়ারের হাতে ক্যাচ দেন আনমোল। তবে অর্ধশতক তুলে নেন অভিষেক। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে আউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে ৫৫ রান করেন তিনি। এরপর ঝড় তোলেন রাহুল ত্রিপাঠি। ক্রিজে যখন সেট হয়ে রাজস্থানের জন্য হুমকি হয়ে উঠেন, তখনই ত্রিপাঠিকে ফেরান চাহাল। সীমানা দড়ির কয়েক ইঞ্চি সামনে ত্রিপাঠির ক্যাচ লুফে নেন জাইসওয়াল।
হেনরিখ ক্লাসেন থিতু হতে চেয়েছিলেন। তাকেও ফেরান চাহাল। ১২ বলে ২৬ করেন তিনি। মাঠে নেমে ১৯ তম ওভারে কুলদিপ যাদবের টানা তিন বলে তিন ছয় মেরে গ্লেন ফিলিপস খেলা জমিয়ে তোলেন। চতুর্থ বলেও চার মারেন ফিলিপস। পঞ্চম বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হেটমায়ারের অসাধারণ ক্যাচে পরিণত হন তিনি। আউট হওয়ার আগে রীতিমতো ঝড় তুলে ৭ বলে ২৫ রান করেন ফিলিপস। কিন্তু আটকানো যায়নি সামাদকে। ৭ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে বেলাশেষের নায়ক বনে যান সামাদ। হায়দরাবাদ পায় ৪ উইকেটের দুর্দান্ত এক জয়।
রাজস্থানের পক্ষে ৪ উইকেট নেন চাহাল। কিন্তু শেষাংশের নাটকে বৃথাই যায় তার দুরন্ত বোলিং।
এই ম্যাচে হারলেও ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে রাজস্থান আছে পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থ স্থানে। ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে হায়দরাবাদ আছে নয়ে।