হারারেতে বাংলাদেশের স্বস্তির দ্বিতীয় দিন
হারারে টেস্টের প্রথম দিন বাংলাদেশকে হতাশা দেখিয়েছেন টপঅর্ডাররা। তবে লিটনকে নিয়ে দিন শেষে আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সেই মাহমুদউল্লাহই আজ বৃহস্পতিবার তাসকিন আহমেদকে নিয়ে গড়ে দিয়েছেন বড় সংগ্রহ। তাই স্বস্তিতে দ্বিতীয় দিন পার করেছে মুমিনুল হকের দল।
যদিও বোলিং নিয়ে কিছুটা ভুগতে দেখা গেছে বাংলাদেশকে। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের উইকেট পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৭.২ ওভার পর্যন্ত। এরপর স্বাগতিক ওপেনার মিল্টনকে এলভির ফাঁদে ফেলেন সাকিব আল হাসান। ৮৩ বলে ৪১ রান করে ফেরেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার। এরপর আর একটি উইকেটও ফেলতে পারেননি বাংলাদেশি বোলাররা।
আজ শেষ সেশনে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে এক উইকেটে ১১৪ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে জিম্বাবুয়ে। এখনো ৩৫৪ রানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
আগে ব্যাট করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৪৬৮ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৫০ রান করেছেন ১৬ মাস পর টেস্টে ফেরা মাহমুদউল্লাহ। এটাই টেস্টে তাঁর ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল ১৪৬ রান।
লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহর লড়াইয়ে গতকাল বুধবার টেস্টের প্রথম দিন ভালো-মন্দে শেষ করে বাংলাদেশ। দিনের শেষ দিকে লিটন ফিরলেও তাসকিনকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। আজ তাসকিনকে নিয়েই দলকে বড় ইনিংস গড়ে দিলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
ক্যারিয়ারের ৫০তম টেস্ট খেলতে নেমে পঞ্চম সেঞ্চুরি করেছেন মাহমুদউল্লাহ। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সফরে শেষ নিজের ৪৯তম টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি।
হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আজ মাঠে নেমে দিনের ১৭ ও ইনিংসের ১০০তম ওভারে পরপর জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শতক করলেন তিনি। সেঞ্চুরি করতে মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন ১৯৫ বল। যেখানে ছিল ১১ চার ও একটি ছক্কার মার।
মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তাসকিন আহমেদও দারুণ খেলেছেন। যেখানে দলের নিয়মিত ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হয়েছেন। সেখানে এই পেসার যেন বনে গেছেন পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত করেছেন ৭৫ রান। তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ১১ বাউন্ডারি দিয়ে। এর আগে ২০১৭ সালে ক্রাইস্টচার্চে করেছিলেন ৩৩ রান। সেটিই ছিল টেস্টে তাঁর সর্বোচ্চ স্কোর। আজ সেটিকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।
এ ছাড়া তাসকিন-মাহমুদউল্লাহর জুটিতে রেকর্ড হয়েছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এর আগে নবম উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি ছিল ৩৫ রানের। সেটি ছিল ২০০৫ সালে মাশরাফী ও তাপস বৈশ্যের। এবার সেই রেকর্ডও ছাপিয়ে গেলেন তাসকিন-মাহমুদউল্লাহ। দুজনে মিলে গড়েন ১৯১ রানের রেকর্ড জুটি।
গতকাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের প্রথম দিন আট উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২৯৪ রান তোলে বাংলাদেশ।
প্রথম দিন ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর লিটন-মাহমুদউল্লাহ মিলে সপ্তম উইকেটে খেলেছেন ১৩৮ রানের ইনিংসে। তাতেই লড়াই জমিয়ে তোলে বাংলাদেশ।
দলের বিপর্যয়ে মাঠে নামা লিটন সেঞ্চুরির পথে হাঁটছিলেন। কিন্তু সেঞ্চুরির থেকে ঠিক ৫ রান দূরে থেকে আউট হলেন তিনি। ফেরার আগে ১৪৭ বলে ৯৫ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এটাই তাঁর টেস্টে ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস। আগে সেরা ছিল ৯৪ রানের। লিটনের পর উইকেটে এসে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজও। শেষ দিক তাসকিনকে নিয়ে দিন পার করেন মাহমুদউল্লাহ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১২৬ ওভারে ৪৬৮/১০ ( সাইফ ০, সাদমান ২৩, নাজমুল ২, মুমিনুল হক ৭০, মুশফিক ১১, সাকিব ৩, মাহমুদউল্লাহ ১৫০*, লিটন দাস ৯৫, মিরাজ ০, তাসকিন ৭৫, এবাদত ০; মুজারাবানি ২৯-৪-৯৪-৪, রিচার্ড ২৩-৫-৮৩-১, তিরিপানো ২৩-৫-৫৮-২, ভিক্টর ১৭-১-৯২-২)।
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস : ৪১ ওভারে ১১৪/১ ( মিল্টন ৪৩, টাকুদজয়নাশে ৩৩, টেইলর৩৭; তাসকিন ১০-৬-১৬-০, সাকিব ১৩-২-৪৩-১, এবাদত ৯-২-২৮-০, মিরাজ ৯-০-২৪-০)।