স্বপ্নের মতো বিদায় জাভির
জাভির মতো এমন বর্ণিল ফুটবল ক্যারিয়ার খুব কমজনেরই আছে। ১৭ বছরের ক্লাব ক্যারিয়ারে জিতেছেন ২৫টি শিরোপা। সর্বকালের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডারের বিদায়টাও হলো স্বপ্নের মতো। বার্সার জার্সি গায়ে শেষ ম্যাচে পেলেন চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের স্বাদ। ভাসলেন ট্রেবল জয়ের আনন্দে।
১৯৯১ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে বার্সেলোনায় পা রেখেছিলেন জাভি। ১৯৯৮ সাল থেকে শুরু করেছিলেন মূল দলে খেলা। তার পর থেকে জিতেছেন আটটি লা লিগা, তিনটি কোপা ডেল রে ও চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। পেপ গার্দিওলার তত্ত্বাবধানে যে বার্সেলোনা ‘ভিন্ন গ্রহের ফুটবল’ খেলার সুখ্যাতি অর্জন করেছিল, সেই দুর্দান্ত দলের মাঝমাঠের প্রধান সেনানী ছিলেন জাভি। সে সময় হয়েছিলেন বার্সার প্রথম ট্রেবল জয়ের প্রত্যক্ষ সাক্ষী। বিদায়ী ম্যাচে অধিনায়কের বাহুবন্ধনী জড়িয়ে আবারো বার্সার ইতিহাসগড়া ট্রেবল জয়ের স্বাদ পেলেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।
জুভেন্টাসের বিপক্ষে ফাইনালে ৭৮ মিনিটের মাথায় আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন জাভি। বার্সা সমর্থকদের হর্ষধ্বনিতে ফেটে পড়েছিল বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়াম। ততক্ষণে ২-১ গোলে এগিয়ে গিয়ে জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেছে কাতালানরা। শেষ মুহূর্তে নেইমারের আরেকটি গোল বার্সাকে দিয়েছে ৩-১ গোলের জয়। এমন বিদায়ের কথা যে কারো স্বপ্নেও আসে না, তা অস্বীকার করেননি জাভি। এই দলটার হয়ে আর খেলতে পারবেন না, সেটা ভেবে কিছুটা আবেগাক্রান্তও হয়েছেন বার্সেলোনার পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬৭টি ম্যাচ খেলা এই ফুটবলার। ম্যাচ শেষে স্প্যানিশ একটি টেলিভিশনকে বলেছেন, ‘স্বপ্নেও এতটা খুশি হওয়ার কথা চিন্তা করতে পারিনি। এই অনুভূতি প্রকাশের ভাষা নেই। এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়ার ছিল না। এখন কিছুটা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ছি। এই দলের হয়ে আর খেলব না, এটা ভাবাটা কঠিন।’
ট্রেবল জয়ের পাশাপাশি নতুন একটু রেকর্ডও জাভি গড়েছেন বিদায়বেলায়। বার্সার হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলেছেন ১৫১টি ম্যাচ। তাঁর খুব কাছাকাছি আছেন ইকার ক্যাসিয়াস। রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক খেলেছেন ১৫০টি ম্যাচ।
শুধু ক্লাব ফুটবলেই নয়, জাতীয় দলের হয়েও জাভি পেয়েছেন দারুণ সফলতা। ২০০৮ সালে যে স্প্যানিশ দলটি ইউরো কাপ জিতে স্পেনের ৪৪ বছরের ট্রফি-খরা ঘুচিয়েছিল, তার অন্যতম প্রধান সদস্য ছিলেন জাভি। দুই বছর পর পেয়েছেন বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ। আরো দুই বছর পর জিতেছিলেন আরেকটি ইউরো কাপ।