অস্ট্রেলিয়াকে ২৬৫ রানের চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের
তৃতীয় দিনেই মিরপুরের উইকেটে বল যেভাবে সাপের মতো বাঁক নিচ্ছে, তাতে করে ২৬৫ রানের লক্ষ্যটা পার করতে পাহাড়েই চড়তে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। না বললেও চলে, ভেঙে গুঁড়া হয়ে যাওয়া উইকেটে ওয়ার্নার-স্মিথদের কঠিন পরীক্ষাই নেবেন সাকিব-মিরাজরা। জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার সামনে ২৬৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২২১ রান তোলে মুশফিকের দল। প্রথম ইনিংসে ২৬০ রান করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ২১৭ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া।
দ্বিতীয় দিনের এক উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে আজ তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। দিনের ষষ্ঠ ওভারে নাথান লায়নের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তাইজুল ইসলাম। খুব বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি ইমরুল কায়েসও। সাজঘরে ফিরেছেন মাত্র ২ রান করে। তাঁর উইকেটটিও গেছে নাথান লায়নের ঝুলিতে। তবে এরপর দলকে বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন তামিম ও মুশফিক।
পঞ্চাশতম টেস্টের প্রথম ইনিংসে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান খেলেছিলেন অর্ধশতকের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসেও ভালো পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন বাঁহাতি ওপেনার। পূর্ণ করেছেন আরো একটি অর্ধশতক। তবে সেঞ্চুরিটা হয়নি। ৭৮ রান করে প্যাট কামিন্সের বলে উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েডকে ক্যাচ দেন তামিম। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও শতক বঞ্চিত হলেন টাইগার ওপেনার।
তামিম ফেরার পর সাকিব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। নাথান লায়নকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে এসেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। প্রথম ইনিংসে ৮৪ রান করা সাকিব দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন মাত্র ৫ রান। তামিম-সাকিব আউট হওয়ার পর লিডটাকে বাড়ানোর পুরো দায়িত্বটাই নিয়েছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দারুণ ছন্দে মনে হচ্ছিল দলনেতাকে। তবে ভাগ্যটা সহায় হয়নি তাঁর। রানআউট হয়ে ফিরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৪১ রান করেন মুশফিক। নাথান লায়নের বলটা জোরের ওপরই মেরেছিলেন সাব্বির রহমান। সোজা গিয়ে লাগে স্টাম্পে। এর আগে বলে হাত ছোঁয়াতে সক্ষম হয়েছিলেন লায়ন।
মুশফিক আউট হওয়ার পরের ওভারেই ফিরে আসেন নাসির হোসেন। অ্যাগারের বলে উইকেটের বলে ক্যাচ দেন তিনি। নাসির ফেরার পর ব্যাটিং করতে এসেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বেশিক্ষণ টেকেননি সাব্বির রহমানও। নাথান লায়নের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সাব্বির। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের ২৬ রানের ছোট ক্যামিও ইনিংসে স্কোরটা দুইশ পার হয় বাংলাদেশের। শেষ পর্যন্ত ২২১ রানে শেষ হয় লাল-সবুজের ইনিংস। বাকি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মুশফিক ৪১ ও সাব্বির রহমান করেন ২২ রান। অজি বোলারদের মধ্যে নাথান লায়ন ছয় ও অ্যাশটন অ্যাগার নিয়েছেন দুই উইকেট।
এর আগে মিরপুর টেস্টের প্রথম দুদিনই নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে সাকিব আল হাসান ও তামিমের অর্ধশতকে ভর করে স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছিল ২৬০ রান। পরে বল হাতেও দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে টাইগাররা। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস গুটিয়ে দিয়েছে মাত্র ২১৭ রানে। পেয়েছে ৪৩ রানের লিড। টেস্ট ইতিহাসের চতুর্থ বোলার হিসেবে সব টেস্টখেলুড়ে দলের বিপক্ষেই পাঁচ উইকেট নেওয়ার বিরল কীর্তি গড়েছেন সাকিব।
৪৩ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর পর ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য সরকার। গতকাল দ্বিতীয় দিনের খেলা নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে দেওয়ার পথে ছিলেন তাঁরা। কিন্তু মাত্র দুই ওভার বাকি থাকার সময় সাজঘরে ফিরেছেন সৌম্য। প্রথম ইনিংসে ৮ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি করতে পেরেছেন ১৫ রান। এরপর অবশ্য আর কোনো উইকেট হারাতে হয়নি বাংলাদেশকে। বাকি দুই ওভার নির্বিঘ্নেই পার করেছিলেন তামিম ও তাইজুল।