মাঠে ফিরতে উদগ্রীব মাশরাফি
দুই হাঁটুতে সাত-সাতটা অস্ত্রোপচারের ধকলকে পেছনে ফেলে খেলার মাঠে নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু বারবার দুর্ভাগ্যেরও শিকার হচ্ছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। গত জুনে বাংলাদেশ দলের প্র্যাকটিসে অংশ নিতে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে যাওয়ার পথে বাসের ধাক্কায় রিকশা থেকে পড়ে হাতে আর পায়ে ব্যথা পেয়েছিলেন। এ মাসের শুরুতে টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার স্বপ্ন নিয়ে যখন জাতীয় লিগে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েন তিনি। জ্বর এতই তীব্র ছিল যে গত ৯ অক্টোবর ভোরে মাশরাফিকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল। পরে পরীক্ষায় জানা যায় বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। হাসপাতালে এক সপ্তাহ চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে শুক্রবার দুপুরে বাসায় ফিরেছেন তিনি।
শুক্রবারই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে একটা প্রীতি ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন মাশরাফি। সেখানেই সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে এখন অনেকটাই সুস্থ বোধ করছি। তবে কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে। তা কাটিয়ে উঠতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন পূর্ণ বিশ্রামে থাকার জন্য। সে অনুযায়ীই চলতে হবে এখন।’
তবে মাঠে ফেরার ব্যাপারে এখনো অনিশ্চয়তায় দেশের অন্যতম সেরা পেসার, ‘পুরোপুরি সুস্থ হয়ে কতদিন পর মাঠে ফিরতে পারব, তা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। আমার তো ইচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব মাঠে ফেরার।’
তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট পেয়েছে নতুন আলোর দিশা। বিশ্বকাপে সাফল্য, ভারত-পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে র্যাঙ্কিংয়ে উত্তরণ, সুবাদে দীর্ঘ এক দশক পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ—সবকিছুই ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ নামে পরিচিত মাশরাফির অধিনায়কত্বে অর্জিত।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকে তাড়া করে বেড়ানো চোটের যন্ত্রণা থেকে অনেক দিন ধরেই মুক্ত মাশরাফি। এক বছর ধরে তিনি বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন দৃঢ়তার সঙ্গে। হাঁটুর অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো হওয়ায় টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার স্বপ্নও দেখছিলেন। কয়েক দিন আগে জানিয়েছিলেন, ‘এখন আমার ফিটনেস খুবই ভালো অবস্থায় আছে। তাই আমি খেলা চালিয়ে যাওয়ার সাহস পাচ্ছি। এমনকি টেস্ট ক্রিকেটে খেলার চিন্তাভাবনাও করছি। আপাতত জাতীয় ক্রিকেট লিগে খেলে ফিটনেস কী অবস্থায় আছে, তা দেখতে হবে।’
তবে হঠাৎ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় টেস্টে ফেরার লড়াই আপাতত পিছিয়ে দিতে হচ্ছে মাশরাফিকে।