বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হতে চান মিরাজ
যুববিশ্বকাপজুড়েই দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশ যে প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেছে তার পেছনে বড় অবদান এই ডানহাতি অলরাউন্ডারের। শেষপর্যন্ত ফাইনাল খেলা বা শিরোপা জয়ের স্বপ্ন সার্থক করতে না পারলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা ঠিকই উঠেছে বাংলাদেশের অধিনায়কের হাতে।
অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পাওয়ার পর এখন আরো অনেক দূরে দৃষ্টি মিরাজের। শুধু জাতীয় দলে খেলাই না, বিশ্ব ক্রিকেটেরই সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন মিরাজ। সেই যোগ্যতাও যে তাঁর আছে সেটাও তিনি প্রমাণ করেছেন দারুণভাবে। যুব বিশ্বকাপের ছয়টি ম্যাচে পাঁচ ইনিংস ব্যাটিং করে ৬০.৫০ গড়ে করেছেন ২৪২ রান। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তাঁর নাম আছে দ্বাদশ স্থানে। টানা তিনটি ম্যাচে খেলেছেন অর্ধশতকের ইনিংস। সব মিলিয়ে পাঁচ ইনিংসের মধ্যে চারটিতেই মিরাজ করেছেন অর্ধশতক। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মিরাজের চেয়ে বেশি রান করেছেন শুধু নাজমুল হোসেন শান্ত (২৫৯)।
বল হাতেও দারুণ সফল ছিলেন এই ডানহাতি স্পিনার। ছয় ম্যাচে নিয়েছেন ১২টি উইকেট। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীদের তালিকায় তাঁর নাম আছে নবম স্থানে। বাংলাদেশের আরেক স্পিনার সালেহ আহমেদ শাওনও নিয়েছেন ১২টি উইকেট। ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন পেয়েছেন বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩টি উইকেট।
ব্যাটে-বলে এমন দারুণ নৈপুণ্য দেখানোর জন্য ম্যাচসেরার পুরস্কারটা যে মিরাজের হাতেই উঠবে, তা এক রকম অনুমিতই ছিল। কাঙ্ক্ষিত সেই পুরস্কারটি হাতে নিয়ে মিরাজ বলেছেন, ‘আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জাতীয় দলে খেলা। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হওয়া। এজন্য আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
এই অর্জন শুধু মিরাজের একারই নয়, পুরো দেশের জন্য গৌরবের বলেও মনে করেন মিরাজ। ১৬টি দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সেরা হতে পারাটা একটা অর্জন বলেই তাঁর বিশ্বাস।
রোববার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ মাধ্যমকে মেহেদি হাসান মিরাজ বলেন, ‘১৬টি দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে আমি সেরা হয়েছি, এটি আমার জন্য একটি বড় অর্জন তো বটেই, পুরো দেশের জন্যও গৌরবের। তবে আমি কখনোই এই পুরস্কারের আশায় খেলিনি। দলকে সাফল্য এনে দেওয়াই মূল্য লক্ষ্য থাকে সব সময়।'
এখন পরিপূর্ণ ক্রিকেটার হিসেবেই জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে চান মিরাজ, ‘এখন আমার লক্ষ্য হচ্ছে টপ ক্রিকেট খেলা। মানে জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া। জাতীয় দলে খেলা প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে, আমারও আছে। তবে আমি একজন পরিপূর্ণ ক্রিকেটার হিসেবে জাতীয় দলে সুযোগ পেতে চাই। নিজেকে তৈরি করেই বড়দের ক্রিকেটে খেলতে চাই।'
নিজের পারফরম্যান্সে খুশি হলেও দলের ব্যর্থতায় কিছুটা হলেও হতাশ বাংলাদেশ অধিনায়ক, 'ঘরের মাঠে ফাইনালে উঠতে না পারাটা আমাদের জন্য হতাশারই বটে। তবে সেদিন সেমিতে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারিনি, তাই হেরেছি। আসলে সেই দিনটি আমাদের ছিল না।'
যুব বিশ্বকাপ শুরুর আগে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি মিরাজকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল ভবিষ্যতের সাকিব আল হাসান হিসেবে। মিরাজ এখন সত্যিই নিজেকে সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়।