‘নীরব ঘাতক’ আল-আমিন
টানা তিন ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ এখন এশিয়া কাপের ফাইনালে। শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের মতো পরাশক্তিকে পরাস্ত করা মাশরাফির দলের সাফল্যে মেতে উঠেছে গোটা দেশ। কারো একক কৃতিত্বে নয়, বরং সবার মিলিত প্রচেষ্টায় সাফল্যের জোয়ারে ভেসে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের সাফল্যের অন্যতম কাণ্ডারি আল-আমিন হোসেন। বল হাতে প্রতি ম্যাচেই জ্বলে উঠে এই পেসার যেন প্রতিপক্ষের সামনে হয়ে উঠেছেন ‘নীরব ঘাতক’।
অথচ ঠিক এক বছর আগে আল-আমিনের জীবনে নেমে এসেছিল আঁধার। গত ফেব্রুয়ারিতে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বিশ্বকাপের মাঝপথেই অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। এর পর জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছিলেন না কিছুতেই। বাংলাদেশ ঘরের মাঠে ভারত-পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারালেও আল-আমিনকে থাকতে হয়েছিল দর্শক হয়ে।
অনেক অপেক্ষার পর অবশেষে সুযোগ পেয়েছিলেন নভেম্বরে, জিম্বাবুয়ে সিরিজে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনটা মন্দ হয়নি। তিনটি ওয়ানডেতে চার উইকেট আর দুটি টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন আল-আমিন। জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর বিপিএলেও ভালোই পারফরম্যান্স ছিল তাঁর। বরিশাল বুলসের রানার্সআপ হওয়ার পেছনে বড় অবদান ছিল আল-আমিনের ১৭ উইকেট শিকারের। জানুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে উইকেট নিয়েছিলেন তিনটি।
তবে এশিয়া কাপেই সবচেয়ে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স আল-আমিনের। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তিন উইকেট পেলেও রান একটু বেশিই (৩৭) দিয়েছিলেন। পরের ম্যাচে আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ওভারে ৮ রান দিয়ে নিয়েছিলেন একটি উইকেট। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের ২৩ রানের জয়ে বড় অবদান ছিল আল-আমিনের তিন উইকেটের। বুধবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে আবার তাঁর তিন উইকেট শিকার। আফ্রিদির দলকে ১২৯ রানে আটকে রাখতে এই পেসারের ভূমিকাও কম নয়।
বাংলাদেশের সাফল্যের উচ্ছ্বাসে আল-আমিনের একটা কীর্তি হয়তো অনেকেরই অজানা। বাছাইপর্বের হিসাব বাদ দিলে তিনি এখন এশিয়া কাপের সফলতম বোলার। এশিয়ার সেরা টুর্নামেন্টটির মূল পর্বে চার ম্যাচ থেকে তাঁর শিকার ১০ উইকেট। সাত উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির।
মুস্তাফিজুর রহমানের হঠাৎ চোট দুশ্চিন্তায় ফেলে দিলেও দুর্দান্ত টিম স্পিরিটে বলীয়ান হয়ে মাশরাফির দল আজ শিরোপার দ্বারপ্রান্তে। যে সাফল্যে আল-আমিনের অবদানও অনস্বীকার্য।