সমালোচকদের একহাত নিলেন মিসবাহ
বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কথা আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন মিসবাহ-উল-হক। কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাকিস্তান হেরে যাওয়ায় বিদায়টা সুখকর হয়নি। এ নিয়ে তাঁর মনে হতাশা থাকাই স্বাভাবিক। সেই হতাশা থেকেই হয়তো সমালোচকদের উল্টো তীব্র সমালোচনা করেছেন মিসবাহ।
পাকিস্তান দলের একের পর এক ব্যর্থতার দায় বেশ কয়েক বছর ধরে টেনে বেড়ানো ৪০ বছর বয়সী মিসবাহ অবশ্য এখনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন না। আরো কিছু দিন টেস্ট খেলার সংকল্প তাঁর। এর একটা কারণ বোধহয় তিনি এখন পাকিস্তানের সফলতম টেস্ট অধিনায়ক।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়ার পর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের। সমালোচকদের বাক্যবাণে মিসবাহ ভীষণ বিরক্ত, ক্ষুব্ধ। অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের এমন সব কটূক্তি করা হচ্ছে যা নীতি-নৈতিকতার মৌলিক মানদণ্ডের অনেক নিচে। পাকিস্তান গণমাধ্যমের কারা টেলিভিশনে আসতে পারবে সে সংক্রান্ত নিয়ম তৈরি করা উচিত। তাদের কিছু সাধারণ প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। মনে হয় এ দেশে যাদের কোনো কাজ নেই তারাই টেলিভিশনে এসে বিশেষজ্ঞ বা বিশ্লেষক বনে যায়!’
ধীরগতির ব্যাটিংয়ের কারণে প্রায়ই সমালোচনা সইতে হয় মিসবাহকে। তবে বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেওয়া মিসবাহর ধারণা, তাঁর সমালোচনার জন্য সমালোচকদের কোনো ‘অজুহাতে’র প্রযোজন হয় না, ‘আমাকে তো সব কিছুর জন্যই শূলে চড়ানো হয়! দলের ব্যাটিং খারাপ হলে মিডিয়া আমাকে দোষারোপ করে। বোলিং বা ফিল্ডিং খারাপ হলেও আমাকে দোষারোপ করা হয়।’ অবশ্য শুধু গণমাধ্যম নয়, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের মনেও মিসবাহকে নিয়ে অনেক ক্ষোভ। বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে পাকিস্তান হেরে যাওয়ার পর লাহোরে তাঁর কুশপুতুল পোড়ানো হয়েছিল।
পাকিস্তান দলের কোচ ওয়াকার ইউনিসের আশঙ্কা, তাঁদের দেশের ক্রিকেট ধীরে-ধীরে ‘মৃত্যু’র দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মিসবাহ অবশ্য এতটা নৈরাশ্যবাদী নন। তবে পাকিস্তান দলের সাফল্যের জন্য কোচ ও অধিনায়ককে আরো বেশি ‘ক্ষমতা’ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। ‘আমার মনে হয় দল নির্বাচনের সময় কোচ ও অধিনায়কের আরো ক্ষমতা থাকা উচিত। বেশির ভাগ সময় দলের কোনো সমস্যার জন্য আমাকে দোষারোপ করা হয়। কিন্তু এটা কেউ বোঝে না যে বেশির ভাগ সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে আমার হাত থাকে না। আমি যাঁদের সঙ্গে খেলেছি তাঁদের কেউ কেউ ভীষণ পক্ষপাতিত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। কোনো-কোনো সাবেক খেলোয়াড় পাকিস্তান দল সম্পর্কে কর্কশ ভাষাও ব্যবহার করেন। এসব কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেটকে সাহায্য করবে না।’