আনন্দিত, তৃপ্ত দুঙ্গা
প্যারিসের স্তাদে দি ফ্রান্সের সঙ্গে দুঙ্গার জীবনের এক দুঃখজনক স্মৃতি জড়িয়ে। এই মাঠেই ১৭ বছর আগে, ১৯৯৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে তাঁর অধিনায়কত্বে ব্রাজিল ৩-০ গোলে হার মেনেছিল ফ্রান্সের কাছে। বৃহস্পতিবার রাতে ফ্রান্সের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচটি তাই এক অর্থে ‘প্রতিশোধের মিশন’ও ছিল দুঙ্গার ব্রাজিলের জন্য। সেই লক্ষ্যে তিনি সফল। তবে শুধু ৩-১ গোলে জেতার জন্যই নয়, দলের খেলার ধরনেও দুঙ্গা আনন্দিত আর তৃপ্ত।
পিছিয়ে পড়েও অস্কার, নেইমার আর লুইজ গুস্তাভোর লক্ষ্যভেদ মধুর জয় এনে দিয়েছে ব্রাজিলকে। বিশ্বকাপের পর দ্বিতীয় দফা কোচের দায়িত্ব নেওয়া দুঙ্গার অধীনে ‘সেলেসাও’দের এটা টানা সপ্তম জয়। ১৭ বছর আগে যে মাঠে পরাজয়ের বেদনায় নীল হয়েছিলেন, সেখানে সাফল্য পেয়ে দুঙ্গা খুশি। একই সঙ্গে দলের খেলা নিয়েও তিনি সন্তুষ্ট, ‘এমন একটা দর্শকভরা স্টেডিয়ামে ফ্রান্সের বিপক্ষে খেলা খুব কঠিন। ফুটবলে হার-জিত থাকেই। তবে ফ্রান্সের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে জেতার অনুভূতিই আলাদা। ব্রাজিল ভালো খেলেই জিতেছে। পিছিয়ে পড়ে দ্রুত জেগে উঠে আমরা সাফল্য পেয়েছি। বল দখলের লড়াইয়েও এগিয়ে ছিলাম আমরা।’
তাই বলে কোনো ধরনের আত্মপ্রসাদে ভুগতে রাজি নন ব্রাজিলের ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক দুঙ্গা, ‘আমরা এমন কিছু ভুল করেছি যেগুলো এড়ানো যেত। আমরা জানি, ফ্রান্স কর্নার আর ফ্রি-কিকে খুব ভালো। তবে নিজেদের ভুল শুধরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতেছি।’
১৯৯৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের অধিনায়ক দিদিয়ের দেশম এখন দলটির কোচের দায়িত্বে। ১৭ বছর আগে স্তাদে দি ফ্রান্সে শিরোপা উৎসবে মেতে ওঠা দেশম একই মাঠে ব্রাজিলের কাছে হেরে গিয়ে হতাশ। তবে এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা তাঁর কণ্ঠে, ‘নিজেদের ভুলের শাস্তি পেতে হয়েছে আমাদের। গত বিশ্বকাপের যন্ত্রণা এখনো হয়তো ভুলতে পারেনি ব্রাজিল। তবে তাদের দলে বেশ কয়েকজন খুব ভালো খেলোয়াড় আছে। আজ রাতে হেরে গেলেও একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে আমাদের জন্য। আমাদের খেলোয়াড়দের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। এ থেকে আমরা শিখতে পারব।’
ফলাফল যা-ই হোক, প্যারিসের মানুষ ম্যাচটাকে মনে রাখবে অন্য কারণে। খেলা শুরুর আগে ফ্রান্সের পক্ষে ১০০টির বেশি ম্যাচ খেলা, চার বিশ্বকাপজয়ী জিনেদিন জিদান, মার্সেল দেসাই, প্যাত্রিক ভিয়েরা আর থিয়েরি অঁরিকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হযেছে।