তাসকিন : মেঘের পরে রোদ!
অস্ট্রেলিয়ার বাউন্সি উইকেটে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ সামলাবেন কে? মুস্তাফিজুর রহমান বহুদিন ধরে ছন্দহীন। শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, ইবাদত হোসেনরা এখনও কুঁড়ি থেকে ফুল হতে পারেনি। বাংলার পেস বাগানে তখন মুচকি হাসছেন আরেকজন। তাসকিন আহমেদ, যিনি ফিরে এসেছেন নবরূপে।
চলতি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারায় বাংলাদেশ। পায় দেড় দশক পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে প্রথম জয়। জয়ের নায়ক তাসকিন আহমেদ, যাকে টাইগারদের পেস আক্রমণের ভবিষ্যৎ নেতা ভাবছেন মাশরাফী-সাকিবরা। অগ্রজদের সত্যি প্রমাণ করে ছুটে চলছেন তাসকিন।
যে তাসকিন দল থেকে বাদ পড়েছিলেন বাজে ফর্মের কারণে, সেই তিনিই অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দুই ম্যাচেই জয়ের নায়ক। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ২৫ রানে ৪ উইকেট নেওয়া তাসকিন জিম্বাবুয়ের সঙ্গে আরও বিধ্বংসী। ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে করেছিলেন ৩ শিকার। দুই ম্যাচেই সেরার পুরস্কার ওঠে তাঁর হাতে।
ভারত ম্যাচে টস জিতে বোলিং নেন সাকিব আল হাসান। তাসকিন আহমেদ এনে দেন দুরন্ত শুরু। সতীর্থদের পুরনো ক্যাচ মিসের মহড়ায় উইকেট পাননি, তবে ৪ ওভারে মাত্র ১৫ দিয়ে চেপে ধরেন ভারতীয় ব্যাটারদের টুঁটি। বিশেষত ওপেনিংয়ে লোকেশ রাহুল যেন চোখে সর্ষেফুলই দেখেছে।
৫ ম্যাচে ৭.২৮ ইকোনমি ও ১৬.৩৮ গড়ে তুলে নিয়েছেন ৮ উইকেট। টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ডটবল দেওয়ার তালিকায় উপরের সারিতে তাসকিনের নাম। প্রায় ৬০ শতাংশ ডট বল দিয়েছেন। পাওয়ার প্লেতে আরও বিধ্বংসী তাসকিনের ডট বল দেওয়ার হার ৭৫ শতাংশ! ভুবনেশ্বর কুমারের ৭৭ শতাংশের পর যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
মাশরাফীর বিদায়ের পর মুস্তাফিজুর রহমানকে ভাবা হচ্ছিল বাংলাদেশের পেস বিভাগের প্রাণ। মুস্তাফিজ ধীরে ধীরে বিবর্ণ হয়ে উঠছেন। হারিয়ে খুঁজছেন নিজেকে। চলতি আসরে কিছুটা ফিরে পেয়েছেন। শঙ্কার কালো মেঘ কাটছে তাসকিনের আগুনঝরা প্রত্যাবর্তনে। ফিরে আসার গল্পটা এমন শক্তিশালী হলে তবেই না মেঘের পরে রোদ হাসবে।