বিশ্বকাপ দল বিশ্লেষণ
অস্ট্রেলিয়ার শক্তিমত্তা, দুর্বলতা ও সম্ভাবনা
সময়ের হিসেবে মাত্র ১০ দিন। এরপরই পর্দা উঠবে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের। ওয়ানডে বিশ্বকাপের এবারের আসরে অংশ নেবে ১০টি দল। বিশ্ব ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের সবচেয়ে বড় আসর এই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ভারতের ১০টি ভিন্ন শহরের ১০টি স্টেডিয়ামে সব মিলিয়ে মোট ৪৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্বকাপে সবচেয়ে সফল দল অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাবনা, শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা।
প্রতি বিশ্বকাপেই সম্ভাব্য ফেভারিট তালিকায় থাকে অস্ট্রেলিয়া। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে রাখা কঠিন। কারণ গত জুনে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা অস্ট্রেলিয়া ভারতের মাটিতে চলমান ওয়ানডে সিরিজে রীতিমত মুখ থুবড়ে পড়েছে। এশিয়ান কন্ডিশনে খুব একটা সাফল্য নেই দলটির। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের শক্তিমত্তা বা দুর্বলতা কি, সেটা একটু জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড : বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড দুর্দান্ত। এখন পর্যন্ত ১২টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা অস্ট্রেলিয়া পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। ভারত ও পাকিস্তানের যৌথ আয়োজনে ১৯৮৭ বিশ্বকাপের প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় অসিরা। পরবর্তীতে ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭ বিশ্বকাপে টানা শিরোপা জেতার রেকর্ড গড়ে। আর সবশেষ মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বে ২০১৫ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াড পর্যালোচনা : এখন পর্যন্ত যতগুলো দল বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে, তাদের প্রায় সবাই নতুন কোনো মুখ রেখেছে দলে। সেদিক থেকে অস্ট্রেলিয়াও ব্যতিক্রম নয়। জশ ইঙ্গলিশ ও শন অ্যাবোটের মতো তরুণদের সুযোগ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। যারা ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেদের প্রমাণ করেছে।
বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াড : প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যালেক্স ক্যারি, জশ ইঙ্গলিশ, মার্কাস স্টোয়নিস, শন অ্যাবোট, জশ হ্যাজেলউড, মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যাস্টন অ্যাগার, ক্যামেরুন গ্রিন, ট্রাভিস হেড, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মিচেল স্টার্ক ও অ্যাডাম জাম্পা।
অস্ট্রেলিয়ার শক্তিমত্তা : ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ হলেও অস্ট্রেলিয়াকে খুব একটা পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই। কারণ দলটির বেশিরভাগ ক্রিকেটারের আইপিএলে খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে। এছাড়াও দ্রুতই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে অসিরা। দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটার অভিজ্ঞ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই অস্ট্রেলিয়া অন্য যেকোনো দল থেকে এগিয়ে থাকবে। প্যাট কামিন্সের দলের শক্তির জায়গা পেস বোলিং ইউনিট। মিচেল স্টার্ক, শন অ্যাবোট, জস হ্যাজেলউডদের মতো বিশ্বমানের বোলাররা যেকোনো ব্যাটারের জন্য আতঙ্কের নাম। এছাড়াও ব্যাটিংয়ে স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নারদের মতো পরীক্ষিতরা যেকোনো বোলিং লাইনআপকে গুড়িয়ে দিতে সক্ষম। তাই তাদেরকে সামলাতেও বাড়তি পরিকল্পনা করতে হবে প্রতিপক্ষ বোলারদের।
অস্ট্রেলিয়ার দুর্বলতা : অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম দুর্বলতা টপ অর্ডারদের ব্যর্থতা। সাম্প্রতিক কয়েকটি সিরিজে জ্বলে উঠতে পারেনি টপ অর্ডাররা। চলমান ভারত সিরিজে ফুটে উঠেছে টপ অর্ডারদের দুর্বলতা। এছাড়াও বিশ্বমানের স্পিনের বিরুদ্ধে বেশ ভুগতে দেখা যায় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের। ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে স্পিনারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের। এছাড়াও ভারতের মাটিতে সবচেয়ে সফল স্পিনার নাথান লায়নকে বিশ্বকাপে দলে রাখা হয়নি। কার্যকরী এই স্পিনারের অভাবটা ভোগাতে পারে অসিদের।
অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাবনা : টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার সামনে সুযোগ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও শ্রেষ্ঠত্বের জানান দেওয়ার। তবে সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে কিছুটা শঙ্কা তো থেকেই যায়।