খাদের কিনারা থেকে নিউজিল্যান্ডকে চ্যালেঞ্জ দিল বাংলাদেশ
ইনিংসের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। দলীয় ৫৬ রানেই নেই চার উইকেট। নড়বড়ে ব্যাটিংয়ে রীতিমতো ধুঁকছিল বাংলাদেশ। একটা সময় মনে হয়, অল্পতেই আটকে যাবে বাংলাদেশ। তবে সেটা হয়নি। খাঁদের কিনারা থেকে দলকে উদ্ধার করেন মুশফিক-সাকিবরা। শেষ দিকে ঢাল হয়ে দাঁড়ান মাহমুদউল্লাহ। তিন অভিজ্ঞ ব্যাটারের দৃঢ়তায় নিউজিল্যান্ডকে ২৪৬ রানের চ্যালেঞ্জ জানাল বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) চেন্নাইয়ের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৪৫ রান তোলে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৫ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। শেষ দিকে ৪১ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাসের অফফর্ম নিয়ে দুশ্চিন্তা যেন কাটছেই না। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারেনি লিটন-তামিম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৬ রানের ইনিংস খেললেও নিউজিল্যান্ডের সাথে গোল্ডেন ডাকে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। লেগ স্ট্যাম্পের ওপর করা বোল্টের ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে গিয়ে থার্ড ম্যানে থাকা হেনরির হাতে ধরা পড়েন লিটন।
শুরুতেই এমন ধাক্কা মোটেও প্রত্যাশিত ছিল না বাংলাদেশের জন্য। যদিও তামিম-মিরাজ জুটিতে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। তবে সেই জুটিও বেশিদূর যায়নি। দলীয় ৪০ রানের মাথায় লকি ফার্গুসনের ফুল লেন্থ ডেলিভারি আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে গিয়ে স্কয়ার লেগের ডেভন কনওয়ের হাতে ধরা পড়েন তামিম। ১৭ বলে ১৬ করে ফিরেন সাজঘরে।
তামিমের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটার মিরাজ ও শান্ত। দুজনেই দলীয় ৫৬ রানে ফেরেন সাজঘরে। ফার্গুসনের শর্ট লেন্থ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে ফাইন লেগে হেনরির ক্যাচে পরিণত হন মিরাজ। আর পার্ট টাইম বোলার গ্লেন ফিলিপসের প্রথম বলেই মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন শান্ত। ৮ বলে ৭ রান করে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
দলীয় ৫৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে মুশফিক-সাকিবের ব্যাটে সেই চাপ কাটিয়ে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। দেখেশুনে ব্যাটিং করতে থাকেন দুজনই। দলীয় ১৫২ রানে গিয়ে থামে এই জুটি। ফার্গুসনের বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে থাকা লাথামের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। তার বিদায়ে ভাঙে ৯৬ রানের জুটি। ৫১ বলে ৪০ রান আসে অধিনায়ক সাকিবের ব্যাট থেকে।
এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন মুশফিক। যদিও সেই জুটি বেশিদূর যায়নি। দলীয় ১৭৫ রানে হেনরির নিচু হয়ে যাওয়া বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মুশফিক। আউটের আগে খেলেন ৭৫ বলে ৬৬ রানের ইনিংস।
মুশফিকের পর দ্রুত বিদায় নেন তাওহিদও। একের পর এক উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে বড় ইনিংস আর গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। শেষের দিকে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে চড়ে কিউইদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৪৫/৯ (লিটন ০, তামিম ১৬, মিরাজ ৩০, শান্ত ৭, সাকিব ৪০, মুশফিক ৬৬, তাওহিদ ১৩, মাহমুদউল্লাহ ৪১*, তাসকিন ১৭, মুস্তাফিজ ৪, শরিফুল ২*; বোল্ট ১০-০-৪৫-২, হেনরি ১০-০-৫৮-২, ফার্গুসন ১০-০-৪৯-৩, স্যান্টনার ১০-১-৩১-১, ফিলিপস ২-০-১৩-১, রাচীন ৭-০-৩৭-০, মিচেল ১-০-১১-০)।