তিন পাণ্ডবের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ
একটা সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটের হাল ধরেছিলেন পঞ্চপাণ্ডব। পাঁচজনের দুজন নেই এবারের বিশ্বকাপে। মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ও তামিম ইকবাল না থাকলেও আছেন বাকি তিনজন। সাকিব আল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদইল্লাহ। দলের এই তিন জ্যেষ্ঠ ক্রিকেটারের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা দেশের ক্রিকেট ভক্তদের।
২০০৭ সালে প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশ নেন সাকিব ও মুশফিক। এরপর থেকে খেলেছেন সবগুলো আসরে। ২০২৩ বিশ্বকাপে পঞ্চমবারের মতোন অংশ নিয়েছেন তারা। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে ৩৩ ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। ১০টি ফিফটি ও দুটি সেঞ্চুরিতে করেছেন ১২০২ রান। বল হাতে পেয়েছেন ৪০ উইকেট। ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনবারই। তিনবারই ২০১৯ বিশ্বকাপে।
মুশফিকও খেলেছেন সাকিবের সমান ৩৩ ম্যাচ। আটটি ফিফটি ও একটি সেঞ্চুরিতে করেছেন ১০৪২ রান। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে করেছেন ৩০ টি ডিসমিসাল। যাতে আছে ২৩টি ক্যাচ ও সাতটি স্ট্যাম্পিং। ম্যাচসেরা হয়েছেন একবার।
মাহমুদউল্লাহ খেলছেন নিজের চতুর্থ বিশ্বকাপ। ২০১১ বিশ্বকাপ দিয়ে শুরু করেন যাত্রা। এই সময়ে ১৮ ম্যাচ খেলে করেছেন ৮১৪ রান। আছে সর্বোচ্চ তিনটি সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানও মাহমুদউল্লাহ। হয়েছেন একবার ম্যাচসেরা।
চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দলগত পারফরম্যান্স হতাশাজনক। ব্যক্তিগত দিক বিবেচনায় মাহমুদউল্লাহ ছাড়া সাকিব ও মুশফিক নেই ছন্দে। চার ম্যাচ খেলে তিনটিতে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১১১ বলে ১১১ রানের চমৎকার ইনিংস খেলেছেন। প্রোটিয়া ম্যাচ ছাড়াও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৯ বলে অপরাজিত ৪১ এবং ভারতের বিপক্ষে করেছেন ৩৬ বলে ৪৬ রান।
ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটো অর্ধশতক করলেও ৫২ ও ৬৬ রানের ইনিংসগুলো বড় করতে পারেননি মুশফিক। মিডল অর্ডারে দলের ব্যর্থতার দায় তিনিও এড়াতে পারেন না। অধিনায়ক সাকিব একদমই ছন্দে নেই। বিশ্বকাপে চোটের কারণে ভারতের বিপক্ষে খেলেননি সাকিব। বাকি চার ম্যাচে সাকিব রান করেছেন মাত্র ৫৬। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪০ রানের ইনিংসটি বাদ দিলে কিছুই নেই তার ভাণ্ডারে। আর বল হাতে নিয়েছেন ছয় উইকেট, যার মধ্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে নিয়েছিলেন তিনটি।
তবু, দিনশেষে দলের সবচেয়ে নির্ভরতার জায়গা এই তিনজন। একা হাতে দলকে অসংখ্য ম্যাচ জিতিয়েছেন তারা। এবারের আসরে পাঁচ ম্যাচের চারটিতে হেরে খাদের কিনারায় বাংলাদেশ। শেষ চারের আশা বাঁচিয়ে রাখতে পরের চার ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই সাকিবদের সামনে।
আগামীকাল শনিবার (২৮ অক্টোবর) ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায়। সেই ম্যাচে তিন পাণ্ডবের জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় বাংলাদেশের সমর্থকরা। আর বাংলাদেশের তিন সিনিয়র একসঙ্গে জ্বলে উঠলে তরুণরা যেমন অনুপ্রাণিত হবে, দলও পাবে এগিয়ে যাওয়ার জ্বালানি।