শেষ আশা বাঁচাতে বাংলাদেশের চাই ২৩০ রান
একের পর এক হারে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে বাংলাদেশের। সেমিফাইনালের স্বপ্নের প্রদীপেও নিভু নিভু আলো। এই আলো জ্বালিয়ে রাখতে হলে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় ছাড়া বিকল্প নেই বাংলাদেশের। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে এমন ম্যাচে বল হাতে জ্বলে উঠলেন সাকিব-মুস্তাফিজরা। তবে, বোলিংয়ের শুরুটা দারুণ করেও দুইশর নিচে ডাচদের থামাতে পারল না বাংলাদেশ। অর্থাৎ সেমিফাইনালের যে ক্ষীণ আশা আছে তা বাঁচিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৩০ রান।
বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২২৯ রান করেছে নেদারল্যান্ডস। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেছেন অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস।
কলকাতায় পা রেখে আজ ঘরের মাঠের স্বাদ পাচ্ছে বাংলাদেশ। ইডেন গার্ডেন যেন রূপ নিয়েছে—‘হোম অফ ক্রিকেট গ্রাউন্ড’ মিরপুর শেরেবাংলায়। মাঠভর্তি দর্শকদের সামনে টস হেরে আগে বোলিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করে বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পেয়ে যায় বাংলাদেশ। চোট কাটিয়ে ফেরা তাসকিন আহমেদের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন বিক্রাম সিং। মিডঅফে সেই ক্যাচ লুফে নিতে ভুল করেননি সাকিব আল হাসান। দলীয় ৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় ডাচরা, বিক্রামও করেন ৩ রান।
পরের ওভারেই দ্বিতীয় ধাক্কাটি দেন শরিফুল ইসলাম। প্রথম ওভারে ৩ রান দেওয়া শরিফুল নিজের দ্বিতীয় ওভারেই ফেরান ম্যাক্স ও’ডাউডকে। তরুণ এই পেসারের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল মোকাবিলায় ক্যাচ তুলে দেন। স্লিপে থাকা তানজিদ তা লুফে নিয়ে উচ্ছ্বাসে মাতেন।
মাত্র ৪ রানে জোড়া ধাক্কা খাওয়ার পরও নুয়ে যায়নি নেদারল্যান্ডস। তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলে তারা। দলীয় ৬৩ রানে সেই জুটি ভাঙে বাংলাদেশ। বোলিংয়ে এসে মুস্তাফিজুর রহমান এসে ভাঙেন ওয়েসলি বারেসির প্রতিরোধ। মুস্তাফিজের বলে পিচের উপরেই বল তুলে দেন বারেসি। ছুটে এসে ক্যাচ নেন সাকিব আল হাসান। ৪১ বলে ৪১ রান করে থামেন তিনি।
পরের ওভারে সাকিবই পান উইকেটের দেখা। কোলিনকে থামিয়ে নিজের প্রথম শিকার তুলে নেন সাকিব। ৬৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর কিছুটা চাপে পড়ে ডাচরা। তবে সেই চাপ সামলে আরেকটি জুটি পেয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। উইকেটে এসে জুটি বাধেন ডে লেডে ও স্কট এডওয়ার্ডস। এই জুটিতে দুজন যোগ করেন ৪৪ রান। ২৭তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। মুস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৩২ বলে ১৭ রান করে বিদায় নেন ডে লেডে।
পরের জুটিতেও শক্ত প্রতিরোধ গড়ে নেদারল্যান্ডস। এবার স্কটের সঙ্গে জুটি বাধেন সাইব্রেন্ড। এই জুটিতে রানের গতি বাড়িয়ে নেয় ডাচরা। দুজন মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৭৮ রান। জমে যাওয়া এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে স্বস্তি দেন মুস্তাফিজ। বাঁহাতি পেসারের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্কট এডওয়ার্ডস। ৬৮ রান করে থামেন ডাচ অধিনায়ক। ৮৯ বলে তার ইনিংস সাজানো ছিল ৬ বাউন্ডারিতে।
এরপর সাইব্রান্ডের প্রতিরোধ থামান মিরাজ। থিতু হওয়া জুটি ভাঙার পরও শেষ দিকে লেজের ব্যাটিংয়ে ভর করে ২২৯ রানে গিয়ে থামে নেদারল্যান্ডস।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৪৩ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন চোট কাটিয়ে ফেরা তাসকিন আহমেদ। ৩৬ রান খরচায় মুস্তাফিজের শিকার দুটি। মেহেদী ও শরিফুলও নেন দুটি উইকেট। সাকিব এক উইকেট নিতে দিয়েছেন ৩৭ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নেদারল্যান্ডস: ৫০ ওভারে ২২৯/১০ (বিক্রাম সিং ৩, ম্যাক্স ও’ডাউড ০, ওয়েসলি ৪১, কোলিন ১৫, স্কট ৬৮, ডে লেডে ১৭, সাইব্র্যান্ড ৩৫, সারিজ ৬, ডট ৯, লোগান, পল ভ্যান ০;মুস্তাফিজ ১০-১-৩৬-২, সাকিব ১০-১-৩৭-১, মিরাজ ৪-০-১৭-০, শরিফুল ১০-০-৫১-২, তাসকিন ৯-১-৪৩-২, শেখ মেহেদি ৭-০-৪০-২)।