ব্যর্থতার একই গল্পে আটকে গেল বাংলাদেশ
ম্যাচের পর ম্যাচ—বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে হতাশার গল্প নিয়ে কম কথা হয়নি। পাকিস্তানের বিপক্ষেও বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে একই সুর। যথারীতি ব্যর্থ টপ অর্ডার। ২৩ রানের মধ্যেই নেই তিন ব্যাটার। টালমাটাল অবস্থায় নিচের দিকে নেমে হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ। তবে, হাফসেঞ্চুরি করলেও দলকে এনে দিতে পারেননি বড় স্কোর। মাহমুদউল্লাহ-লিটনের জুটি ও সাকিব আল হাসানের শেষের লড়াইয়ে কোনোমতে পাকিস্তানকে ২০৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপের ৩১তম ম্যাচে আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) পাকিস্তানের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৪৫.১ ওভারে ১০ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২০৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৬ রান মাহমুদউল্লাহর। ৭০ বলে তার ইনিংসটি সাজানো ছয়টি চার ও এক ছক্কায়।
ইডেন গার্ডেন্সে আগের দিন টস ভাগ্য সহায় হয়নি বাংলাদেশের। তবে, পাকিস্তানের বিপক্ষে টসে জিতেছেন সাকিব আল হাসান। বেছে নিয়েছেন ব্যাটিং। তবে, আগে ব্যাট করতে নামলেও পাল্টায়নি বাংলাদেশের টপ অর্ডারের চিত্র।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই বড় ধাক্কা দেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। নিজের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে এলবির ফাঁদে ফেলেন তানজিদ তামিমকে। ৫ বল মোকাবিলা করে রানের খাতাও খুলতে পারেননি ধারাবাহিক ব্যর্থ হওয়া তানজিদ।
নিজের পরের ওভারে আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকার নাজমুল হোসেন শান্ত (৪)। ওয়ানডাউনে নেমে আজও ব্যর্থ শান্ত। আফ্রিদির ফুল ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে গিয়ে তালগোল পাকান শান্ত। টাইমিং মিস করে ক্যাচ তুলে দেন শর্ট মিড উইকেটে। সেখানে থাকা উসামা মীর উইকেট তুলে নিতে ভুল করলেন না।
চারে নেমে হাল ধরতে পারলেন মুশফিক। হারিস রউফের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মুশফিক (৫)। দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর পাঁচে নেমে লিটনের সঙ্গে জুটি বাধেন মাহমুদউল্লাহ। এই জুটিতে আশা জাগে বাংলাদেশের। কিন্তু থিতু হয়েও টিকতে পারলেন না লিটন। ২১তম ওভারে প্রতিপক্ষকে উইকেট উপহার দিয়ে বসেন লিটন। ইফতেখার আহমেদের একেবারে সাদামাটা বলে ক্যাচ তুলে দেন লিটন। ৬৪ বলে ৪৫ করে ভাঙে তার প্রতিরোধ, ভেঙে যায় ৭৯ রানের জুটি।
নিজের আউট যেন নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না লিটন। চোখে-মুখে হতাশার ছাপ স্পষ্ট। লিটনের পর সাকিবের সঙ্গে কিছুক্ষণ টানেন মাহমুদউল্লাহ। ৫৮ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। কিন্তু পঞ্চাশ ছোঁয়ার তিনিও আর টিকলেন না। আফ্রিদির লেন্থ বলে লাইন মিস করেন মাহমুদউল্লাহ। প্যাডে লেগে বল ছোবল আনে মিডল স্টাম্পে। ৫৬ রানেই থেমে যায় তার ইনিংস।
এরপর শুধু হতাশাই দেখেছে বাংলাদেশ। যথারীতি ভেঙে পড়েছে মিডল অর্ডার। একাদশে ফেরা তাওহিদ ফেরেন ৭ রান করে। সাকিব টিকে থাকলেও তার রানের গতি ছিল মন্থর। বাকিদের নিয়ে মন্থর গতিতে টানলেও লড়াইয়ের স্কোর এনে দিতে পারেননি অধিনায়ক। ব্যাটিং ব্যর্থতার একই গল্পে বাংলাদেশ থমকে যায় মাত্র ২০৪ রানে। ব্যাট হাতে সাকিব করেন ৬৪ বলে ৪৩ রান। তার সঙ্গে মিরাজ করেন ৩০ বলে ২৫ রান।
বল হাতে ২৩ রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। সমান তিনটি নেন মোহাম্মদ ওয়াসিমও। ৩৬ রান খরচায় হারিস রউফের শিকার দুটি। ইফতেখার আহমেদ ও উসামা মীর নেন সমান এক উইকেট করে।