বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি শহীদি
চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত আফগানিস্তান যা করেছে, তা হার মানাবে রূপকথাকেও। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ, নেই পর্যাপ্ত সুবিধা, তবুও খেলছে বীরের মতো। হারিয়েছে তিনি সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে। এমনকি, সেমি ফাইনালে যাওয়ার দৌড়ে টিকে আছে।
আফগানদের সবচেয়ে বড় শক্তি দলের মধ্যে তাদের বোঝাপড়া। একটি দল হয়ে পারফর্ম করছে তারা। রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী, হাসমতউল্লাহ শহীদিরা সব সময়ই বলে আসেন, আমরা একটা দল হয়ে খেলছি। আর সেই দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আফগান অধিনায়ক শহীদি। চলতি আসরে ব্যাট হাতে আফগানদের পক্ষে সবচেয়ে বেশি রান তারই। ছয় ম্যাচে করেছেন ২২৬ রান। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জেতা ম্যাচ দুটিতে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।
অথচ, এই শহীদির বাবা চাইতেন না ছেলে ক্রিকেটার হোক। হাসমতউল্লাহ শহীদির বাবা হাশিম শহীদি ছিলেন পদার্থবিজ্ঞানী। পদার্থবিজ্ঞানের ওপর ৪৪টি বই লিখেছেন তিনি। আফগানিস্তানে নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞানের বইগুলো হাশিম শহীদির লেখা। তিনি চেয়েছিলেন, নিজের মতো ছেলেও বিজ্ঞানী হবেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত হয় আফগান অধিনায়ক শহীদির সাক্ষাৎকার। সেখানে নিজের বাবার স্মৃতিচারণ করে শহীদি বলেন, ‘বাবা চেয়েছিলেন আমি বিজ্ঞানী হই। সেজন্য পড়াশোনাটা যেন ভালো করে করি। আর ক্রিকেট যেন অবসরে খেলি। কিন্তু, আমি পড়াশোনায় একদমই ভালো ছিলাম না। তবে, বাবার মন রক্ষার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরীক্ষা দিয়েছিলাম।’
ক্রিকেটার ছেলের সাফল্য দেখে যেতে পারেননি হাশিম শহীদি। ২০১৮ সালে মারা যান তিনি। সেদিনই আফগানিস্তানের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করেন হাসমত শহীদি। বাবার মৃত্যু সংবাদে ম্যাচ ছেড়ে ঘরে ফিরতে হয় তাকে।