শঙ্কা কাটিয়ে সম্ভাবনার পথে বাংলাদেশ
ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে শঙ্কার কালো মেঘ মোটামুটি কেটে যায়। মেঘে ঢাকা আকাশে তারকার আলো আনেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল হাসান জয়। তৃতীয় দিন সকালে আজ বুধবার (২৩ অক্টোবর) অবশ্য তা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। মুশফিক, জয় দুজনই বিদায় নেন। লিটন দাস আবারও ব্যর্থ।
বাংলাদেশের এই দলটা ভীষণ আনপ্রেডিক্টেবল। দক্ষিণ আফ্রিকা যখন তৈরি হচ্ছিল স্বাগতিকদের ইনিংস ব্যবধানে হারাতে, তখনেই বাধ সাধলেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও জাকের আলী অনিক। সাদা পোশাকে জাকেরের প্রথম টেস্ট এটি। বাংলাদেশ দলে নতুন হোক বা পুরোনো, মিডল অর্ডার ব্যাটারদের থাকে বিরাট দায়িত্ব। টপঅর্ডারের ব্যর্থতার দায় বর্তায় তাদের ওপর। হাল ধরতে হয় ম্যাচের।
অভিজ্ঞ মিরাজ এক্ষেত্রে জাকেরকে সাহস দিয়েছেন বলা চলে। সাকিব আল হাসানের পর বাংলাদেশ দলের অলিখিত সেরা অলরাউন্ডার মিরাজ। তিনি বেশ ধারাবাহিক বটে। আজও যেমন বুক চিতিয়ে দিলেন। বিরুদ্ধ স্রোতে জাকেরকে নিয়ে সাঁতরে দলকে লিড এনে দিলেন। বিকেলে ৮১ রানের লিড নিয়ে দিন শেষ করা এই দলটাকে দেখে বোঝার উপায় নেই, সকালে ইনিংস হার চোখ রাঙাচ্ছিল।
প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ জাকের দ্বিতীয় ইনিংসে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মেলে ধরলেন নিজেকে। অর্ধশতক করে শেষ পর্যন্ত কেশভ মাহারাজের স্পিনে লেগবিফোর হয়ে থামে জাকেরের ইনিংস। আউট হওয়ার আগে চাপের মুখে সাতটি চারে খেলা ১১১ বলে ৫৮ রানের ইনিংসটি প্রশংসার দাবি রাখে। মিরাজের সঙ্গে তার ১৩৮ রানের জুটিতে প্রাণ ফিরে বাংলাদেশ।
টেস্টের চতুর্থ দিন কাল। মিরাজ শুরু করবেন ৮৭ রান নিয়ে। ১৭১ বলের ইনিংস সাজিয়েছেন ৯টি চার ও এক ছক্কায়। তবে, তার ইনিংসের সবচেয়ে বড় অলঙ্কার ধৈর্য। তা ধরে রাখতে পারলে বাংলাদেশের সামনে সুযোগ আছে এই ম্যাচে ফল বের করার। সকাল থেকে মিরাজকে সঙ্গ দেবেন নাঈম হাসান। যিনি অপরাজিত ২৮ বলে ১৬ রানে।
টেস্ট ক্রিকেট মানে মাঠে সময় কাটানো। ব্যাটাররা যত বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকবেন, প্রতিপক্ষ বোলাররা মানসিকভাবে ততটা পিছিয়ে যাবে। সাদা পোশাকের খেলায় মনস্তাত্ত্বিক এই লড়াইটা ভীষণ জরুরি। মিরাজ-নাঈমের জন্য এটিই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তা করতে পারলে ঢাকা টেস্টে যে কোনো কিছু সম্ভব।