ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর আগে করণীয়
অনলাইনের প্রচার ও প্রসার যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে ব্যবসার সুযোগ। অনলাইনের বাজারে পরিচিত হয়ে ওঠা নাম ই-কমার্স। এর পূর্ণ রূপ ‘ইলেকট্রনিক কমার্স’। ই-কমার্স মানে হচ্ছে ইন্টারনেটে একটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয়ের প্রক্রিয়া। ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার আগে কিছু বিষয়ে কাজ করে নেওয়া ভালো। ফোর্বস জানিয়েছে এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সে বিষয়গুলো।
১. পণ্য নির্বাচন, দাম এবং ডেলিভারি সিস্টেম
ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর প্রথম ধাপে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে সঠিক পণ্য নির্বাচন করা। পণ্য নির্বাচনে অন্যদের তুলনায় আপনার মার্কেট স্ট্র্যাটেজিতে পার্থক্য করতে পারলে এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা বেশি। মনে রাখবেন, ব্যবহারকারীরা সব সময় ভিন্নতা পছন্দ করেন। আপনার পণ্যটি কেমন বিক্রি হতে পারে, তা পণ্যের দাম, ডিসকাউন্ট এবং স্থানীয় বাজারে এর প্রাপ্যতার ওপর নির্ভর করে।
পণ্যের দামটি এমনভাবে ঠিক করবেন, যাতে আপনি পণ্যটিকে বর্তমান বাজারের থেকে কম দামে বিক্রি করতে পারেন এবং খেয়াল রাখতে হবে, যাতে আপনার পণ্যের বিনিয়োগ যেন ফেরত আসে। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট’। বাজার বিবেচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনে প্রতিটি পণ্যের ওপর আপনি কত শতাংশ মূল্যহ্রাস দিতে পারবেন, তা আপনাকে পণ্য কেনার পূর্বে হিসাব করতে হবে। যেসব পণ্যের চাহিদা ভালো, কিন্তু স্থানীয় প্রাপ্যতা কম, এ ধরনের পণ্য রাখতে পারেন। তাহলে বিক্রির সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
এ ব্যবসার একটা বড় বিষয় হচ্ছে ভোক্তার কাছে পণ্যটি সঠিক সময়ে পৌঁছে দেওয়া। পণ্যের ডেলিভারির জন্য আপনি কয়েকজন ব্যক্তি নিয়োগ করতে পারেন। এ কাজে পার্টটাইমার হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাজে লাগাতে পারেন। এতে তাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হবে এবং আপনিও কম খরচে ভালো কর্মী পাবেন।
২. ভালো পণ্য খুঁজে বের করা
আপনি যে পণ্যের মাধ্যমে শুরু করুন না কেন, অবশ্যই পণ্যের গুণগত মানের দিকে সর্বোচ্চ নজর দিতে হবে। যেমন—গ্যাজেট বা ইলেকট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে মূল উৎপাদনকারীর থেকে জোগাড় করতে পারলে ভালো। কারণ, এতে পণ্যের ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টি ঠিকভাবে ব্যবহারকারীদের দেওয়া সম্ভব হয়। সরাসরি উৎপাদনকারীর কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ করা গেলে সেটা খরচ যেমন কমিয়ে আনে, তেমনি ভালো পণ্যের নিশ্চয়তা দেয়।
৩. ওয়েব সাইট তৈরি
আপনার পণ্যের ওপর ভিত্তি করে আপনাকে দৃষ্টিনন্দন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। তার জন্য আপনি দেশের ই-কমার্স সাইটগুলো দেখতে পারেন। যেমন : esho.com, priyoshop.com, akhoni.com, ajkerdeal.com, rokomari.com ইত্যাদি। তবে ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ের মধ্যে আপনাকে দুটি বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে।
ডোমেইন নাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে যত সুন্দর, সহজ এবং ছোট নাম ঠিক করা যায়, ততই ভালো। এতে নামটা মানুষের মনেও থাকবে, সে সঙ্গে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে। আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে সব ফিচার নির্বাচন করবেন। কিন্তু একটি ব্যাপার খেয়াল রাখবেন, যাতে আপনার সার্ভারে কমপক্ষে একসঙ্গে ১০ লাখ ইউজার সাবস্ক্রাইব করতে পারেন, এতে যেন সার্ভারের গতি কমে না যায়। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবেন, এর ফলে আপনার সকল কনটেন্ট গুছিয়ে রাখতে সুবিধা হবে। কনটেন্ট ম্যানেজমেন্টের সুবিধার জন্য অনেক ধরনের প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেমন—ওয়ার্ডপ্রেস, হাবস্পট, জুমলা, ধ্রুপাল, এবং ম্যাজেন্টো।