অধিকৃত অঞ্চলসহ রাশিয়ার অখণ্ডতা রক্ষায় ল্যাভরভের অঙ্গীকার
যুদ্ধের পরিধি আরও বাড়ানো এমনকি আণবিক অস্ত্র ব্যবহারের শঙ্কার মধ্যে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলে গণভোটের পর যদি তা মস্কোর সঙ্গে একীভূত হয় তবে সেই অঞ্চলসহ রাশিয়ার অখণ্ডতা রক্ষায় তার দেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতায় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় ল্যাভরভ প্রতিবেশি ইউক্রেনে গত ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হওয়া সামরিক আগ্রাসনের পক্ষে তার মতামত তুলে ধরেন। এসময় তিনি আগের মতোই কিয়েভের নির্বাচিত সরকারকে অবৈধভাবে বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে বলেন, ওই সরকার নব্য নাৎসিপন্থিতে পূর্ণ যারা দেশের পূর্বাঞ্চলের রুশ ভাষাভাষি মানুষের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছিল। খবর রয়টার্সর।
এদিকে, পশ্চিমাদের চোখে সাত মাসের যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করতে গায়ের জোরে দখল করা ইউক্রেনের ভূখন্ডকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করতে শুক্রবার থেকে ওইসব অঞ্চলে গণভোট শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে কিয়েভ বলছে স্থানীয় জনগণকে ভোট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে আর ভোটের এই চারদিন তাদের এলাকার বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণের পর সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নব্য নাৎসিবাদী শাসণে বছরের পর বছর ধরে নিষ্পেষিত ওই এলাকাগুলোর জনগণের মতামতকে রাশিয়া অবশ্যই সম্মান দেবে।’
এ প্রসঙ্গে ল্যাভরভের কাছে জানতে চাওয়া হয় ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলের নিরাপত্তায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো সম্ভাবনা আছে কি না। উত্তরে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন সংযুক্ত এলাকাসহ সংবিধান স্বীকৃত রাশিয়ার ভূখন্ড রাষ্ট্রের পূর্ণ সুরক্ষার আওতায় থাকবে। রাশিয়ান ফেডারেশনের সব আইন, মতবাদ, ধারণা ও কৌশল সম্পূর্ণ ভূখন্ডের জন্য প্রযোজ্য হবে।’
ল্যাভরভের এই বক্তব্য এমন সময়ে এলো যখন বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও পুতিনের অন্যতম সহযোগি দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছিলেন যে, নতুনভাবে সংযুক্ত ভূখন্ডসহ রাশিয়ার অখন্ডতা রক্ষায় দেশটি তার সামরিক বহরের কৌশলগত পারমাণবিক বোমাসহ যে কোনো অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।
এদিকে, পুতিনের কিছুদিন আগের বক্তব্য যে তিনি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রশ্নে কোনো ধাপ্পা দিচ্ছেন না এবং লাভরভের এই মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা। টুইটারে এক বার্তায় কুলেবা বলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য সহ্য করা হবে না এবং তা পুরো বিশ্বকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।’
ইউক্রেনের আত্মরক্ষায় অস্ত্র সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগিরা এই যুদ্ধকে আরও উস্কে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে রাশিয়া।
অন্যদিকে, গণভোটের বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে ইউক্রেন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো টুইটার বার্তায় বলেন, ‘জাতিসংঘের মূলনীতি ভঙ্গ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইউক্রেনের সীমান্ত পরিবর্তনে রাশিয়াকেই দায়ী থাকতে হবে।’