অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালেন ইমরান খান
পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানে ইমরান খান সরকারের পতন হয়েছে। শনিবার দিনভর নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে মধ্যরাতে গিয়ে পার্লামেন্টে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। অনাস্থা ভোটে ইমরান খানের বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৭৪টি। ৩৪২ আসনের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন অনলাইন এ তথ্য জানায়।
পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইমরান খান। তাঁর ক্ষমতাচ্যুতির মধ্য দিয়ে দেশটির নির্বাচিত একজন প্রধানমন্ত্রীও মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেন না। তবে তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান।
পাকিস্তানের সময় শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দেশটির পার্লামেন্টে ইমরান খানের ভাগ্যনির্ধারণী অধিবেশন শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তা মুলতবি করা হয়। এরপর জোহরের নামাজের বিরতি, পরে বসে আবার দুদফায় ইফতার ও এশার নামাজের বিরতি দেওয়া হয়। এরপর রাত সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় দুঘণ্টা বিলম্বে শুরু হয় অধিবেশন। শুরুতেই স্পিকার আসাদ কায়সার পদত্যাগের ঘোষণা দেন। প্যানেল চেয়ারম্যান আয়াজ সাদিককে আহ্বান জানানো হলে তাঁর নেতৃত্বেই ইমরানের ওপর অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটি হয়। তবে প্যানেল চেয়ারম্যান হওয়ায় নিজে ভোট দিতে পারেননি আয়াজ সাদিক।
গত ৭ মার্চ জাতীয় পরিষদের সচিবালয়ে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধীদলগুলো। এরপর ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার। প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির জন্য ৩ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়।
পরে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি বলেছিলেন, এ অনাস্থা প্রস্তাব পাকিস্তানের সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। এরপর ইমরানের আহ্বানে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
এরপর ডেপুটি স্পিকারের অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি আমলে নেন। এ ছাড়া বিরোধীরাও সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের করে সুপ্রিম কোর্টে। এরপর ৩ এপ্রিল অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক বলে রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পার্লামেন্ট ও সরকার পুনর্বহাল হয়। ৯ এপ্রিল (শনিবার) অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিরও নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। সে অনুযায়ী নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে শনিবার সারা দিন পার করে দিনগত রাতে ভোটাভুটি হয়।