ইউক্রেনে হামলার অজুহাত তৈরির পরিকল্পনা করছে রাশিয়া : যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তাদের কাছে তথ্য রয়েছে—ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের অজুহাত তৈরির পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে নাশকতাকারীদের ইউক্রেনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের। স্থানীয় সময় শুক্রবার এমন তথ্য নিয়ে হাজির হন মার্কিন কর্মকর্তারা। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে ইউক্রেন। কিন্তু, রাশিয়া তা চায় না। গত বছরের শেষের দিক থেকে ইউক্রেন সীমান্তে লাখো সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। দেশটির এক কথা—ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করা যাবে না এবং ইউরোপের পূর্ব দিকে ন্যাটোর আর বিস্তার ঘটানো যাবে না। অবশ্য রাশিয়া বরাবরই বলছে, ইউক্রেনে হামলা বা অভিযানের পরিকল্পনা তাদের নেই। কিন্তু, এরপরও এ ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গন উত্তপ্ত রয়েছে।
ইউক্রেনে হামলা চালাতে রাশিয়া অজুহাত তৈরির পথে হাঁটছে—এমন কথা অবশ্য একদিন আগেই বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলাইভান। এর পরে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কারবি শুক্রবার বলেন, তাঁদের কাছে তথ্য রয়েছে—সাজানো হামলা চালাতে নাশকতাকারী একটি দলকে প্রস্তুত করেছে রাশিয়া। এমনভাবে হামলাটি পরিকল্পনা করা হয়েছে যেন মনে হয়—ইউক্রেনে বসবাসরত রুশভাষীদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এবং এ ছুতোয় রুশ বাহিনী ইউক্রেনে ঢুকে পড়বে।
জন কারবির সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই কথা বলেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি। তিনি জানান, মার্কিন গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্য বলছে, পূর্ব ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান চালানোর কয়েক সপ্তাহ আগে সাজানো হামলাগুলো হবে। জেন সাকি দাবি করেন, চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এসব হামলা শুরু হতে পারে।
এ ছাড়া অজুহাতমূলক হামলার জন্য তৈরি করা রুশ নাশকতাকারী দলটি সম্পর্কে আভাসও দিয়েছেন জেন সাকি। তিনি বলেন, এসব নাশকতাকারী আধুনিক যুদ্ধকৌশল ও বিস্ফোরক ব্যবহারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবি একেবারে উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ যুক্তরাষ্ট্রের এসব তথ্য ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু জন কারবি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের দেওয়া এসব তথ্য ‘একদম নির্ভুল’। তিনি আরও বলেছেন, হামলার জন্য তৈরি রাখা দলে রাশিয়ার গোয়েন্দা সদস্য, সেনাসদস্যসহ অন্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যেরা থাকতে পারেন।
এক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালে উত্খাত হয় তত্কালীন ইউক্রেন সরকার। ওই সরকার ছিল পশ্চিমাবিরোধী এবং রাশিয়ার পক্ষে। ইউক্রেনের রুশপন্থি ওই সরকারের পতনের পর দেশটির অধীনে থাকা ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করে নেয় রাশিয়া। এ ছাড়া রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দেয়। এসব ঘটনায় নিহত হয় ১৩ হাজারের বেশি মানুষ।