ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার নতুন সামরিক কমান্ডার
ইউক্রেন যুদ্ধে সাম্প্রতিক ধারাবাহিক বিপর্যয়ের পর সমালোচনার মুখে যুদ্ধক্ষেত্র পরিচালনায় রাশিয়া একজন নতুন জেনারেলকে নিয়োগ দিয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক নিয়োগে মস্কোর ঘোষণাটি আসে শনিবার। খবর আল জাজিরার।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ও দক্ষিণ ভাগে পাল্টা আক্রমণে পিছিয়ে আসা রাশিয়ার সেনাবাহিনীর কমান্ডে থাকা দুইজন জেনারেলকে বরখাস্তের পর নতুন করে এই সিদ্ধান্ত আসলো।
জেনারেল সেরগেই সুরোভিকিন নামের ওই পদস্থ সামরিক কর্মকর্তার নিয়োগের বিষয়ে ক্রেমলিন জানায়, তিনি জয়েন্ট গ্রুপিং ফোর্সের বিশেষ সামরিক কার্যক্রমের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ৫৫ বছর বয়সী জেনারেল সুরোভিকিনের জন্ম সাইবেরিয়ায়। এর আগে ২০১৭ সালে তিনি রাশিয়ার এয়ার এন্ড স্পেস ফোর্সের দায়িত্বে ছিলেন।
এছাড়া, তাজিকিস্তান ও চেচনিয়ার যুদ্ধে তার রয়েছে সামরিক অভিজ্ঞতা। সবশেষে সিরিয়া যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন, এই যুদ্ধে সিরিয়ার বাশার আল আসাদের পক্ষ নিয়ে রাশিয়া ২০১৫ সালে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। জেনারেল সুরোভিকিনকে সিরিয়ার আলেপ্পো শহর ব্যাপক বোমাবর্ষণে ধ্বংসের জন্য দায়ী করা হয়। জুলাই মাসের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি ইউক্রেনের ‘সাউথ ফোর্সের’ দায়িত্বে ছিলেন।
এদিকে, সুইস সামরিক পর্যালোচনা অনুযায়ী বলা হয়েছে, ইউক্রেনে সামরিক তৎপরতা কোনো একক কমান্ডারের অধীনে হয়নি। কারণ সেখানে সেনাবাহিনীর পাঁচটি দল আলাদ আলাদা সামরিক তৎপরতায় জড়িত। তবে এখন জেনারেল সুরোভিকিনের অধীনে যুদ্ধের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবে।
এ বিষয়ে সুইস সংস্থাটি জানায়, এখন থেকে একজনের নেতৃত্বে বা একটি প্রধান দপ্তরের নির্দেশনায় অভিযান পরিচালিত হবে। এটা এই বার্তাও দেয় যে, এখন থেকে হয়তো যুদ্ধ কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় চলবে। এটা হতে পারে লুহানস্ক, দোনেৎস্ক বা দক্ষিণের কোথাও। তবে এটাও দেখা যাচ্ছে যে রাশিয়ার যুদ্ধের ধার কমে আসছে।
কমান্ডার নিয়োগের এই ঘোষণা এমন সময়ে এলো যখন রাশিয়ার সৈন্যরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ অঞ্চল থেকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে পিছিয়ে এসেছে। ইউক্রেন সেপ্টেম্বরে কয়েক হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা রাশিয়ার কাছ থেকে পুনর্দখল করে নেয়। এছাড়া, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের লাইমান পরিবহণ হাবসহ দক্ষিণাঞ্চলের খেরসোন অঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা থেকে রাশিয়া পিছু হটতে বাধ্য হয়।