কথা বলতে পারছেন রুশদি, খুলে নেওয়া হয়েছে ভেন্টিলেটর
বুকারজয়ী ঔপন্যাসিক সালমান রুশদিকে ভেন্টিলেটর (কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়া) খুলে নেওয়া হয়েছে এবং তিনি এখন কথা বলতে পারছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার তাঁর এজেন্ট অ্যান্ড্রু উইলি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।
রুশদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় রয়েছে এমন একজন লেখক অতিশ তাসির টুইটার পোস্টে জানিয়েছেন, রুশদির শরীর থেকে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট সরিয়ে নেওয়া হলেও তিনি এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তবে তিনি কথা বলতে পারছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, রুশদির ওপর সন্দেহভাজন হামলাকারীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ হামলার সন্দেহে আটক হাদি মাতারকে (২৪) জামিন না দিয়ে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত শুক্রবার নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছুরিকাঘাতের শিকার হন ৭৫ বছর বয়সি লেখক সালমান রুশদি। ঘটনার পরপরই রুশদিকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এক হাসপাতালে।
পরে নিউইয়র্ক স্টেট পুলিশ সংবাদ সম্মেলনে জানায়, নিউ জার্সির ফেয়ারভিউ থেকে হাদি মাতার নামে ২৪ বছর বয়সি একজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে।
ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি জেসন শ্মিড্ট বলেছেন, রুশদির কথিত আক্রমণকারী ইচ্ছাকৃতভাবে রুশদির ক্ষতি করার জন্য তাঁর ওপর হামলা করেছেন। রুশদি যে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন, সে অনুষ্ঠানে তিনি অগ্রিম পাস নিয়ে এবং ভুয়া আইডি নিয়ে একদিন আগেই পৌঁছেছিলেন। এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত হামলা।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদি গত শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে নিউইয়র্কের চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউটে এক সাহিত্য সভায় ছুরিকাঘাতের শিকার হন। ঘটনার পরপরই তাঁকে হেলিকপ্টারে করে পেনসিলভানিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৪৭ সালের ১৯ জুন ভারতের তৎকালীন বোম্বে (বর্তমান মুম্বাই) শহরে জন্মগ্রহণ করেন সালমান রুশদি। ১৪ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাজ্যের চলে যান। কেমব্রিজের কিংস কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে দেশটির নাগরিকত্ব অর্জন করেন। একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কপিরাইটার হিসেবে চাকরি শুরু করলেও পরবর্তীতে উপন্যাস ও নন-ফিকশন লেখায় মনোযোগ দেন তিনি। ১৯৮১ সালে দ্বিতীয় উপন্যাস ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ লিখে বুকার প্রাইজ জিতেন। তবে, ১৯৮৮ সালে চতুর্থ উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ লিখে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেন। বইটিতে ইসলাম ধর্মের নবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) অবমাননা করা হয়েছে এবং নবুয়ত নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে অভিযোগ এনে পরের বছর ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি সালমান রুশদিকে হত্যার ফতোয়া জারি করেন।