কানাডার পার্লামেন্টে তিব্বতী নেতার ভাষণ, ক্ষুব্ধ চীন
নির্বাসনে থাকা তিব্বতী সরকারের প্রেসিডেন্ট পেনপা সেরিং কানাডার হাউস অব কমন্সে ভাষণ দিয়েছেন। গত শনিবারের ওই ঘটনায় কানাডায় অবস্থিত চীনা দূতাবাস থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র ‘তিব্বতের স্বাধীনতা’ অর্জনের লক্ষ্যে গঠিত নির্বাসিত তিব্বত সরকারকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনৈতিক সংগঠন’ বলে অভিহিত করেছেন।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় তিব্বত প্রশাসনের (সিটিএ) নেতা পেনপা সেরিংকে ‘সরাসরি চীনবিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী’ আখ্যা দিয়েছেন চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র। তিনি দাবি করেছেন—পেনপা তিব্বতের স্বাধীনতার ধারণা বিক্রি করে বিষয়টিকে আন্তর্জাতিকীকরণের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ ছাড়া বিবৃতিতে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘তথাকথিত তিব্বত-চীন সংলাপের বিষয়ে বলতে চাই—আমরা কোনো তিব্বতীয় নির্বাসিত সরকারকে স্বীকৃতি দেইনি এবং কেন্দ্রীয় সরকার কখনোই এ ধরনের একটি অবৈধ সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করবে না।’
বিবৃতিতে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধে কানাডা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে চীনা মুখপাত্র বলেন, ‘জিজাং (তিব্বত) চীনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এটি অনেক দেশ দ্বারা স্বীকৃত একটি সত্য। তাই, জিজাংয়ের বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু কোন দেশ যদি চীন-বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে সহযোগিতা করে তাহলে বেইজিং পালটা পদক্ষেপ নিতে ভুল করবে না।’
এর আগে তিব্বতে সাংস্কৃতিক গণহত্যা হতে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন সেরিং। এ আবহে ২০২২ সালের বেজিং শীতকালীন অলিম্পিক্সের আগে গোটা বিশ্বকে চিনের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
সেরিংয়ের ভাষ্য, ‘আমরা চীনের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। তবে, বেইজিংয়ের বর্তমান নীতি তিব্বতী সংস্কৃতির ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।’ সেরিং আরও বলেন, ‘সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। একবার এটি নির্মূল হয়ে গেলে, কোনো কিছুর জন্য লড়াই করার কোনো মানে হয় না।’
এএনআই’র দাবি—১৯৫১ সাল থেকে চীনা কর্তৃপক্ষ তিব্বত এবং পশ্চিম চীনের তিব্বত অঞ্চলের ওপর কঠোর দখলদারত্ব বজায় রেখেছে। শুধু তাই নয়, তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয়ের শান্তিপূর্ণ প্রকাশকে সীমিত করতে বাধ্য করা হয়েছে৷ সেইসঙ্গে অভিযোগ রয়েছে নিপীড়ন, নির্যাতন, কারাদণ্ড ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হচ্ছে অঞ্চলটির মুক্তিকামী মানুষদের।